বন্যা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনঃকর্মসংস্থানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও ইউসেপ’র বিশেষ উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের উত্তরাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যা ও কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য একটি দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান পুনর্গঠন কর্মসূচি চালু করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এবং ইউসেপ বাংলাদেশ। এই অংশীদারিত্বের আওতায় সিলেট জেলার ৫০০ জন সুবিধাভোগী মার্কেট-ড্রাইভেন ভোকেশনাল (বৃত্তিমূলক) প্রশিক্ষণ পাবেন।
সাম্প্রতিক কয়েক মাসের মধ্যে চাকরি ও আয়ের উত্স হারানো মানুষদের জন্যই এই কর্মসূচি। নির্বাচিত ৫০০ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে ২৭৮ জন মহামারী মহামারীর প্রাদুর্ভাবের মুখমুখী এবং বাকি ২২২ জন এমন ব্যক্তি, যারা সাম্প্রতিক বন্যার কারণে বাস্তুহারা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাভোগী এবং নারী সুবিধাভোগীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “যখন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল জুড়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়, তখন তা সেখানকার মানুষগুলোর জীবনে একটি বিধ্বংসী প্রভাব রেখে গেছে। সেখানকার মানুষগুলো ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার এবং মহামারী পরবর্তী ক্ষতি মোকাবিলা করছে। এই মানুষগুলোর পুনর্বাসনের মূলমন্ত্র হলো তাদের নতুন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে সহযোগিতা করা। নতুন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বৃহত্তর এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের ক্ষমতায়ন এবং দক্ষতার ব্যবধান দূর করা এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইউসেপ-এর সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে পেরে এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও রিসোর্স কাজে লাগিয়ে জনগণকে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারায় আমরা আনন্দিত।”
ইউসেপ বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল করিম বলেন, “দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান পুনর্গঠন কর্মসূচি সম্প্রসারণে ধারাবাহিক সহায়তার জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ’কে ধন্যবাদ জানাই। এই কর্মসূচিটি করোনা মহামারীতে চাকরি হারানো যুবক ও তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছে।”
দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান পুনর্গঠনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে যে বিষয়টি শেখানো হবে তা ইউসেপ বাংলাদেশ কর্তৃক একাধিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ও গবেষণার পর তৈরি করা হয়েছে, যা আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক উভয় ক্ষেত্রেই দক্ষতার সম্পৃক্ত গ্যাপগুলো চিহ্নিত করেছে। অংশগ্রহণকারীদের চাকরির বাজারের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতার সম্মিলন ঘটিয়ে কর্মসূচিটি ডিজাইন করা হয়েছে।
দীর্ঘ ১১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী ব্যাংক হিসেবে, দেশের মানুষকে পিছিয়ে না রেখে এবং পরিবেশগত ক্ষতি ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি না করে দেশের বাণিজ্যিক উন্নয়নে ও বিকাশ সাধনে ভূমিকা রাখছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তন দেশের মানুষের জন্য বিরাট ঝুঁকির কারণ, তাই এই বিষয়ে এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যাংকটি কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব আজ নজিরবিহীন কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার মধ্যে ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সংকট নিঃসন্দেহে অন্যতম। মহামারীর দরূন দেশে অর্থনীতি বিপর্যয় সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। এর ফলে তাদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও আর্থিক অবস্থা আজ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। তাই মহামারীর মতো চ্যালেঞ্জ দ্রুত মোকাবেলায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রয়োজনীয় সাহায্য ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে উন্নয়ন খাতের অংশীদারদের সাথে নিয়ে কাজ করছে ব্যাংকটি। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড দীর্ঘমেয়াদী পুনরুদ্ধার নিশ্চিতে শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মশক্তি পুনঃএকত্রীকরণ, স্বাস্থ্য এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
১৯৭২ সালে লিন্ডসে অ্যালান চেইন-এর হাত ধরে ইউসেপ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইউসেপ বাংলাদেশ একটি বেসরকারি সংস্থা, যা কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের দ্বিতীয় সুযোগ এবং যুবক ও প্রাপ্তবয়স্কদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়। প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে, এক্ষেত্রে বিশেষ করে হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের নারী, শিশু এবং যুবকরা প্রাধান্য পেয়ে থাকে।