চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন ও গভর্নরকে স্বারকলিপি প্রদান ব্যাংকারদের
নিজস্ব প্রতিবেদক: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, করোনার মধ্যে যেসব ব্যাংকার চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন নির্দেশনা বেশির ভাগ ব্যাংকই পরিপালন করেনি। এমনি পরিস্থিতিতে চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও গভর্নরকে স্বারকলিপি প্রদান করেছে চাকরিচ্যুত ব্যাংকাররা।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন শেষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে তারা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে ছাঁটাই ও পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যাংকাররা জানান, করোনার সময় অন্যায় ও অমানবিকভাবে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক কয়েক হাজার কর্মীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য ও ছাঁটাই করে।
বেআইনিভাবে পদত্যাগে বাধ্য ও ছাঁটাই করা কর্মকর্তাদের বহালের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তপূর্বক প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার নং-২১ তারিখ ১৬-০৯-২০২১) জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন করার পরও অনেক ব্যাংক তাদের কর্মীদের বহাল করছে না। অন্যায় চাকরিচ্যুতিতে ব্যাংকগুলোর উন্নয়নে অবদান রাখা কয়েক হাজার অভিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাগাদা দেয়ার পরও বেশির ভাগ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা সার্কুলার অনুযায়ী কর্মীদের বহালে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান আসেনি।
মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শওকত হায়াত বলেন, এইচআর থেকে ডেকে নিয়ে তাকে কোনো কারণ ছাড়াই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। কারণ জিজ্ঞেস করলে এইচআর বলেন, আপনার কোনো সমস্যা নেই। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আপনাকে চাচ্ছে না। আপনি অন্য কোথাও চাকরি দেখেন। এরপরও আমি পদত্যাগ না করায় আমাকে ডেকে নিয়ে বলা হলো, পদত্যাগ না করলে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে না। এমন হুমকিতে পদত্যাগে বাধ্য হই।
যমুনা ব্যাংক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া এনামুল হাসান বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের চাকরি পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়ার পর নিয়ম মেনে আমি পুনর্বহালের আবেদন করেছি। একবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি।’
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৬ সেপ্টেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হওয়া কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করে। ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি ব্যাংকগুলো। পর গত ১৫ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করে চাকরিচ্যুত ব্যাংকাররা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ২৫ জুলাই আবারও মানববন্ধন করে তারা। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেন।