বন্ডে বিনিয়োগের সমাধান শিগগিরই: বিএসইসি চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুঁজিবাজারের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগসীমার জটিলতা সমাধানে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এখন থেকে শেয়ারের ক্রয়-মূল্যের ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ (Exposure to Capital Market) করা হবে।
এদিকে বন্ড মার্কেটকে জনপ্রিয় করার জন্য একত্রে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বন্ডের বিনিয়োগকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োসীমার বাইরে রাখতে চায় বিএসইসি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বন্ডের বিনিয়োগ পুঁজিবাজার বিনিয়োগসীমার বাইরে থাকবে। খুব শিগগিরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক উইথ বিএসইসি চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ফিক্সড ডিপোজিটের রেট কমে যাওয়া ও ইনফ্লেশনের রেট বেড়ে যাওয়ার কারণে সঞ্চয়ের যে সুযোগ ছিল, তা এখন নেই। তাই, এখন হায়ার রিটার্নের দিকে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের বিচার-বিশ্লেষণে ভয় পেলে মিউচুয়াল ফান্ড বা বন্ডে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিমুক্ত। আর কেউ যদি রিস্ক নিতে চান, তাহলে জেনে-বুঝে, স্পেকুলেশন, অ্যাডভাইস ও ক্যালকুলেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবেন।’
তিনি বলেন, বন্ড মার্কেট প্রসারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি যৌথভাবে কাজ করবে। চলতি বছরের মধ্যে বন্ডের বিষয়ে অনেক ভালো সিদ্ধান্ত আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, অধিকাংশ সময়ে ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বড় বড় প্রজেক্ট করতে গেলে মানুষ বিরক্ত হবে। তাই বন্ড নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। আগে বন্ড নিয়ে বেশি কাজ করা হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বন্ড নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। শিগগিরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। বন্ড বাজার অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর বাইরে সরকারের বিল ও বন্ডে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলো, যা প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। এরপরই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে প্রাইমারি ডিলার নয় এমন বেসরকারি ব্যাংকগুলো। ট্রেজারি বন্ডে এসব ব্যাংকের বিনিয়োগ রয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ২৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।
এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করেছে এক হাজার ১৮১ কোটি টাকা, আমানত বিমা ট্রাস্টের রয়েছে ১০ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা, সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর ৩০২ কোটি টাকা, জীবনবিমা কোম্পানিগুলোর ১৮ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৮৫ কোটি টাকা। প্রভিডেন্ট, পেনশন ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডের আট হাজার ৭২৬ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ফান্ডের ২৫১ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের ২৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।