পোশাক খাতে ফেয়ার প্রাইস অ্যাপ দিবে পণ্যের যৌক্তিক দাম!
নিজস্ব প্রতিবেদক: তৈরী পোশাক কারখানায় যৌন হয়রানি রোধে কর্মপরিবেশ উন্নয়নে দেশের পোশাক খাত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া পণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণে ফেয়ার প্রাইস অ্যাপ ব্যবহার করে ব্র্যান্ডের সঙ্গে দরকষাকষির বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা আনবে। নীটওয়্যার কারখানায় নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ ও বায়াদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে এক সাথে কাজ করবে বিকেএমইএ ও সাসটেইনেবল টেক্সটাইল ইনিশিঢেটিভ: টুগেদার ফর চেঞ্জ (স্টিচ)। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ নিটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার এন্ড এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন (বিকিএমইএ) ও স্টিচের মধ্যে এ বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থনীতি বিষয়ক ফার্স্ট সেক্রেটারি বাস বøাউ জানান, এ দেশের পোশাক কারখানায় জেন্ডার সমতা আনতে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। বাংলাদেশের পোশাক খাতের অগ্রগতি অকল্পনীয়। নেদারল্যান্ড এ ধরনের আরও কয়েকটি চুক্তিতে আগ্রহী।
ফেয়ার উইয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলেকজেন্ডার কন্সটাম বলেন, গার্মেন্টসে যৌন হয়রানি রোধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ভাগ্যবশত এটি বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে বেশি। অবশ্য এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশেরই না, এটি সারা বিশে^রই সমস্যা।
তিনি বলেন, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে আমরা এখন থেকে একসঙ্গে কাজ করবো। আরেকটি চুক্তি হয়েছে ফেয়ার প্রাইস নিয়ে। এর মাধ্যমে কারখানাগুলো সরাসরি ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারবে। ক্রেতাদের সঙ্গে সহজে কথাও বলতে পারবে। অনেক কারখানাই আমাদের অনুরোধ করে কারখানায় একটি ফেয়ার প্রাইস নিয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্য।
অনুষ্ঠানে বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ফেয়ার প্রাইস অ্যাপ দিয়ে কারখানাগুলো ক্রেতাদের কাছে আরও সহজে পৌঁছে যেতে পারবে। আমরা এটিকে তাদের কাছে বুঝানোটাই অনেক গুরুত্ব্পূর্ণ। এর মাধ্যমে কারখানাগুলোতে ট্রেড এঙ্গেল দেখতে চাই।
তিনি বলেন, দেশে এক হাজারেরও ওপর গার্মেন্টস কারখানা তৈরী হয়েছে। এটি ইতিবাচক দিক। তবে আইএলও-১৯০ এর চুক্তির দাবি উঠলেও আমরা এখনই তা করছি না। যেসব দেশ এসব চুক্তি করেছে, তাদের বিচার বিশ্লেষণ করে এরপরই সে বিষয়ে চিন্তা করবো।
বিকেএমইএর এ নেতা আরও বলেন, ফেয়ার প্রাইসের মাধ্যমে আমার প্রফিট পর্যন্ত ভাবতে হবে। আমাদের বাঁচার জন্য শ্রমিক প্রয়োজন হয়। ক্রেতাদেরও মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য আমাদের টুলস দরকার। আমরা সেদিক বিবেচনা করেই এটি করেছি।
দুটি চক্তির মধ্যে একটির উদেশ্য হলো, লিঙ্গ বৈষম্য , যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি নির্মূল করতে ২০০৮ সালের এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই কমিটি কাজ করা। প্রকল্প পরিচালনায় অভ্যন্তরীন মাস্টার ট্রেইনারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিকাশ, এবং মূল্যায়নে বিকেএমইএকে কারিগরি সহায়তা দেবে স্টিচ কনসোর্টিয়াম। প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মন্ডিয়াল এফএনভি, এথিক্যাল ট্রেডিং ইনিশিয়েটিভ (ইটিআই) এবং ফেয়ারওয়্যার ফাউন্ডেশন এই প্রকল্পে যুক্ত থাকবে। এতে অর্থায়ন করে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে যুক্ত আছে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফেয়ার প্রাইস অ্যাপের মাধ্যমে উৎপাদনের খরচ, উপাদান ও পরিমাণ সন্নিবেশ করে কারখানা এবং ব্র্যান্ডগুলিকে তথ্য দিয়ে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে সহায়তা করবে। ক্রেতাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বিকেএমইএ’র সদস্য কারখানাগুলোতে এই অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাজ করবে বিকেএমইএ ও ফেয়ারওয়্যার ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইটিআই এর কান্ট্রি ম্যানেজার আবিল বিন আমিন, ফেয়ার ওয়্যার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার বাবলুর রহমান, মন্ডিয়াল এফএনভি’র কনসালটেন্ট শাহিনুর রহমান, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি আকতার হোসেন অপূর্ব, সাবেক পরিচালক শহীদউদ্দিন আহমেদ আজাদ, স্টিচের কনসোর্টিয়াম কো-অর্ডিনেটর মায়ে ক্যালেন্ডার, ঢাকায় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি বাস বøাউ, স্টিচের ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাডভাইজারি বোর্ডের উপদেষ্টা আমিনুল হকসহ আরো অনেকে।