আইসিটি সেক্টরে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারীত্ব বাড়বে, আশাবাদ পলকের
নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরসহ সার্বিক ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা আরও প্রসারিত ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় তিনি মার্সি টেম্বনের মেয়াদকালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কৌশলগত বিষয়ে দ্রুত সমাধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। আগামীতেও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এমন সম্পর্ক বজায় থাকবে ও আইসিটি সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারীত্ব বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় আইসিটি বিভাগে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ এবং ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি’ নামে দুটি পৃথক প্রকল্প চলমান রয়েছে। দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে তরুণ প্রজন্ম চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি সৃষ্টির প্রতি অধিক মনযোগী হবে। অথচ ১৩ বছর আগে দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিল। আর বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ ডিজিটাল এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরি করা এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।
অন্যদিকে ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি’ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতি প্রসারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা এবং দেশীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পের প্রসার ঘটানো। এ প্রকল্পের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি ও চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। প্রতিমন্ত্রী প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বিশ্বব্যাংকের অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য কান্ট্রি ডিরেক্টরকে অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে এ লক্ষ্যে নিয়মিত সমন্বয় সভা করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী, ফলে গ্লোবাল ইকোনমিতে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে শিক্ষা-স্বস্থ্য-যোগাযোগ-আইসিটিসহ বিভিন্ন সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। ফলে এখন বাংলাদেশ টেক-অফ করার পর্যায়ে আছে। কোনো দেশের উন্নয়নে সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং দক্ষ জনশক্তি, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, ইনোভেটিভ আইডিয়া ও এক্সিলারেশন অত্যন্ত প্রয়োজন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কাউকে মডেল হিসেবে নয় বাংলাদেশকেই অন্য দেশ মডেল হিসেবে গ্রহণ করবে।
মতবিনিময় সভায় ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি’ প্রকল্পের পরিচালক ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান, ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান, স্টার্ট আপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামী আহমেদ, ইনোভেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশন স্পেশালিস্ট মো. আব্দুল বারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।