লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ঋণ মাফের ঘোষণা বাইডেনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে লাখ লাখ সাবেক কলেজ শিক্ষার্থীদের ঋণ মাফের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ আগস্ট) তিনি বলেছেন, মার্কিন সরকার ঋণগ্রস্ত সাবেক শিক্ষার্থীদের নেওয়া ১০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত ঋণ মাফ করে দেবে।
২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানের সময় জো বাইডেন এ বিষয়ে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং অবশেষে বুধবার তিনি তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক শিক্ষার্থীদের ঋণ মাফের এই পদক্ষেপটি আগামী নভেম্বরের কংগ্রেসের নির্বাচনে বাইডেনের দলীয় ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন বাড়াতে পারে। তবে কিছু অর্থনীতিবিদ বলছেন, ঋণ মাফের মতো এই পদক্ষেপ মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেসের কিছু রিপাবলিকান প্রশ্ন তুলেছেন যে, ঋণ বাতিল করার আইনি কর্তৃত্ব মার্কিন প্রেসিডেন্টের আছে কি না।
রয়টার্স বলছে, ঋণ মাফ করে দেওয়ার ফলে শত শত বিলিয়ন ডলার মুক্ত হয়ে যাবে যা দিয়ে বাড়ি কেনা বা অন্যান্য বড় ব্যয়ের দিকে গ্রাহকরা ঝুঁকতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বাইডেনের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির লড়াইয়ে একটি নতুন অসমতা যোগ করবে।
বুধবার হোয়াইট হাউসে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, তার এই পদক্ষেপ ‘সেসব পরিবারের জন্য যাদের এই সুবিধা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। মূলত করোনা মহামারিতে মধ্যবিত্ত লোকেরা বিশেষভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন’।
এছাড়া নিজের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সমালোচনার জবাব দিয়ে জো বাইডেন বলেন, ঋণ মাফের এই পদক্ষেপের ফলে উচ্চ-আয়ের কোনো পরিবার উপকৃত হবে না। তার ভাষায়, ‘শ্রমজীবী আমেরিকান এবং মধ্যবিত্তদের সাহায্য করার জন্য আমি কখনোই ক্ষমা চাইব না, বিশেষ করে সেই লোকদের কাছে নয় যারা ২ লাখ কোটি মার্কিন ডলার কর ছাড়ের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। যাতে মূলত ধনী আমেরিকানরা এবং বৃহত্তম কর্পোরেশনগুলো উপকৃত হয়েছিল।’
মূলত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে রিপাবলিকানরা কর ছাড়ের যে আইন পাস করেছিল সেটিকে ইঙ্গিত করেই একথা বলেন বাইডেন।
আবার অনেক ডেমোক্র্যাট ঋণগ্রহীতা শিক্ষার্থীদের ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত ক্ষমা করার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চাপ দিয়েছিলেন। তবে রিপাবলিকানদের বেশিরভাগই ছাত্র ঋণ ক্ষমার মতো পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল। তারা এটিকে অন্যায্য বলেও অভিহিত করেছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে সাংবাদিকদের বলেছেন, মহামারির মতো জাতীয় জরুরি অবস্থার সময় আইনের অধীনে ঋণ ক্ষমা করার আইনী কর্তৃত্ব প্রশাসনের রয়েছে।
এর আগে, রিপাবলিকান প্রতিনিধি এলিস স্টেফানিক এই পরিকল্পনাকে ‘বেপরোয়া এবং অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।