নগদের কর্মীদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ট্রাস্ট-কাম-সেটেলমেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ কর্মশালা
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত নন ব্যাংক পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
‘গাইডলাইন ফর ট্রাস্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ইন পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সার্ভিস’ শীর্ষক এই কর্মশালা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংক-এর পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম পরিচালক, হাফিয়া তাজরিয়ান। গত শনিবার ঢাকার বনানীতে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন হাফিয়া তাজরিয়ান এবং ‘নগদ’ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। এ ছাড়া কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ‘নগদ’ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক, চিফ বিজনেস অফিসার শেখ আমিনুর রহমান, চিফ করপোরেট অ্যান্ড এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার এম নুরুল আলম, এফসিএস। কর্মশালায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ডাক অধিদপ্তরের পোস্টাল এটাচি মো. মাসুদ খাঁন এবং অতিরিক্ত পোস্ট মাস্টার জেনারেল আল মাহবুব।
কর্মশালা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানিয়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘নগদ সবসময় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করে। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সব নীতিমালা মেনে চলার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতীজ্ঞ। সেই আগ্রহ থেকেই আমরা আজ ট্রাস্ট ফান্ড সম্পর্কে আরও ধারণা নিতে এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছি। এই কর্মশালা পরিচালনা করার জন্য আমি অনেক ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক হাফিয়া তাজরিয়ানকে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত নন ব্যাংক পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে এই কর্মশালায় ধারণা দেওয়া হয়। আদি পণ্য বিনিময়, স্বর্ণ বিনিময় ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ব্যাংক নোট থেকে বর্তমান সময়ের ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে আলাপ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক হাফিয়া তাজরিয়ান। তিনি বিভিন্নভাবে এই কর্মশালায় নন ব্যাংক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব ও কর্তব্য তুলে ধরেন।
হাফিয়া তাজরিয়ান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘প্রতিদিন প্রযুক্তি এগোচ্ছে এবং আর্থিক খাতও সেইভাবে বিবর্তিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সাথে পরিচালিত হওয়ার জন্য বলে থাকে। ট্রাস্ট ফান্ড হলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গ্রাহকদের গচ্ছিত অর্থ। ফলে এই অর্থ পরিচালনায় নগদ সবসময়ের মতো সর্বোচ্চ সচেতনতা দেখাবে, এটাই বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করে।’
এরপর একটি এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘নগদ’-এর দায়িত্ব নিয়ে কথা বলেন তিনি। কীভাবে একটি এমএফএস প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের অর্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে এবং সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম কী, তা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেন। ‘ট্রাস্ট ফান্ড’ কী, কীভাবে পরিচালনা করা হয় এবং ট্রাস্টকাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের নিয়মাবলী তুলে ধরেন তিনি।
সবমিলিয়ে ‘নগদ’-এর পক্ষ থেকে বাছাইকৃত অন্তত ৫০ জন কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তবৃন্দ এই কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালার দুটি সেশনের পর ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন শুনে উত্তর দেন হাফিয়া তাজরিয়ান। এই পর্যায়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক নিজেও প্রশ্ন করেন। তাঁকেও যথাযথ উত্তর দেন হাফিয়া তাজরিয়ান।
সফলভাবে এই কর্মশালা শেষ হওয়ার পর সকল অংশগ্রহণকারীর মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়। এরপর ‘নগদ’-এর পক্ষ থেকে অসাধারণ এই কর্মশালা পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও হাফিয়া তাজরিয়ানকে ধন্যবাদ দেন তানভীর এ মিশুক। এ ছাড়া ডাক বিভাগের প্রতিনিধিদের এবং অংশগ্রহণকারীদেরও ধন্যবাদ দেন ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। হাফিয়া তাজরিয়ান আহ্বান জানান, এরপরও কোনো কিছু জানার থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক আনন্দের সাথে সব প্রশ্নের জবাব দেবে। দেশের অন্যতম শীর্ষ এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘নগদ’-এর সাফল্য ও সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করেন তিনি।