এমারেল্ড অয়েলের তেল যাবে জাপানে
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ধানের কুঁড়ার তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল জাপানে রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে দেশটির রাজধানী টোকিওতে একটি শাখা খোলা হয়েছে। গত ২০ আগস্ট এই শাখা খোলা হয়েছে বলে মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।
শেরপুর জেলার সদরে শেরীপাড়ায় অবস্থিত কারখানাটি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তির দুই বছর পরই কোম্পানিটির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি জড়িয়ে জেলে যান। পরে জামিন নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেলে কোম্পানির কার্যক্রম ২০১৬ সাল থেকে বন্ধ হয়ে যায়। পরে কোম্পানিটিকে চালু করতে ২০২১ প্রথম দিকে এমারেল্ড অয়েলের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ নামে জাপান প্রবাসী এক বাংলাদেশির এমারেল্ডের শেয়ার কিনে মালিকানায় আসেন। এরই মধ্যে কোম্পানিটি উৎপাদন শুরু করেছে। ঢাকায় জমকালো অনুষ্ঠান করে তেল বাজারজাতকরণ উদ্বোধনও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) এমারেল্ড ওয়েলের শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সায়। টানা এক মাস ফ্লোর প্রাইস ৩৬ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পর গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর দর কিছুটা বেড়েছিল। তবে আবার তা নিম্নমুখী।
২০১৭ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর থেকে আয় ব্যয়ের হিসাব না দেয়া কোম্পানিটি বর্তমানে জেড গ্রুপে লেনদেন হচ্ছে। কোম্পানিটির তেল বাজারজাতকরণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সব প্রান্তিক হিসাব প্রকাশের ঘোষণা দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে বিনিয়োগকারীরা জানতে পারছে না, উৎপাদনে আসার পর কোম্পানির আর্থিক অবস্থার কতটা উন্নতি হয়েছে বা আদৌ হয়েছে কি না।
পুঁজিবাজারে এ কোম্পানির ৫ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৫০০টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ আছে পরিচালকদের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার।
এমারেল্ড অয়েলের বর্তমান বাজার মূলধন ২২০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা; রিজার্ভের পরিমাণ ৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০১৪ সালে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৩৯ পয়সা আয় করে এক টাকা নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। পরের বছর শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ১০ পয়সা আয় করে নগদ ১ টাকা ও প্রতি ১০০ শেয়ারে ১০টি শেয়ার লভ্যাংশ দেয়া হয়। ২০১৬ অর্থবছরে মুনাফা হয় শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৩৩ পয়সা। সে বছর লভ্যাংশ দেয়া হয় প্রতি ১০০ শেয়ারে নতুন ১০টি শেয়ার।
পরের বছরই ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ৯০ পয়সা আয়ের তথ্য জানানোর পর কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিবেদন আর প্রকাশ করা হয়নি।