আজ: সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ১লা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

ওয়ালটন হাই-টেকের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২২) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

রোববার (৬ নভেম্বর, ২০২২) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এই প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি হিসাব বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (প্রথম প্রান্তিক) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ দশমিক ৫২ টাকা। পূর্বের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৯ দশমিক ২৮ টাকা।

২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) পুনঃমূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২১৪ দশমিক ৭৫ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়ন সহ ৩১৮ দশমিক ০৬ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৪ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৪২ গুণ বেশি।

এদিকে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এই সময়ে বিক্রয় এবং ঋণের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২১ দশমিক ৮১ এবং ৮ দশমিক ০২ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৩০ এবং ১ দশমিক ২০ শতাংশ।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। এই সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি ২৬২ দশমিক ৪৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১০ দশমিক ১১ কোটি টাকা। এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৩২২ দশমিক ৪২ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৩৯ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। যার ফলে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (প্রথম প্রান্তিক) কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১২ শতাংশ। কিন্তু পূর্বের বছর একই সময়ে কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনা মহামারি, মহামারি পরবর্তী অবস্থা এবং সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় ভূ-রাজনৈতিক সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানিসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, টালমাটাল বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মূল্যহ্রাসের কারণে কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে রেফ্রিজারেটর পণ্যে ভ্যাট যুক্ত হওয়ায় কোম্পানির মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পরে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রায় আর্থিক দায় মেটানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশি মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ডলারের অপ্রতুলতা এবং ব্যাপক মূল্যস্ফীতির কারণে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।

এর ফলে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। যেহেতু ইলেকট্রনিক্স পণ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, তাই ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্যের চাহিদাও কমেছে। সবকিছু মিলে কোম্পানির আর্থিক ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যার ফলে পূর্বের বছরের তুলনায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির আর্থিক মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও ভ‚-রাজনৈতিক সংকটসহ নানান প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিস্থিতির কারণে প্রথম প্রান্তিকে মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মার্কিন ডলারের বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি না পেলে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানিটি লাভের ধারায় থাকত। এ সময়ে ওয়ালটনের ইপিএস হতো অন্তত ৭ দশমিক ১৪ টাকা। মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার অবনমন না ঘটলে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়াত ২০০ কোটি টাকার অধিক।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.