পোশাক শিল্পের সক্ষমতা দেখবে ক্রেতারা
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাশ্রয়ী কিংবা উচ্চ মূল্যের ফ্যাশন দুরস্ত পোশাক উৎপাদন করে এখন বাংলাদেশ। ক্রেতাদের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী মান বজায় এবং যথাসময়ে পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সুনাম আছে উদ্যোক্তাদের। পোশাক খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশের রোল মডেল হিসেবেও এখন বিবেচনা করা হয় বাংলাদেশকে। তবে বিশ্ববাজারে ব্র্র্যান্ডিংয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে পোশাক খাত। নেতিবাচক প্রচারণাও আছে। ফলে ক্রেতাদের সঙ্গে দর আলোচনায় ‘আন্ডারডগ’ অবস্থানে থাকেন রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা। এতে ন্যায্য দরও মিলছে না।
এ বাস্তবতায় বিশ্বদরবারে পোশাক খাতের ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। প্রথমবারের মতো ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ নামে মেগা আয়োজনে থাকছে পাঁচটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট। এগুলো হচ্ছে- ঢাকা অ্যাপারেল সামিট, ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপো, বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো, সাসটেইনেবল ডিজাইন অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ও সাসটেইনেবল লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডস। এ ছাড়া মেইড ইন বাংলাদেশ ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ডস নামে আলাদা ইভেন্টসহ আরও বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে এতে।
এই আয়োজনে পোশাক খাতের নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা, পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষাসহ অনুসরণযোগ্য চর্চার গল্প নিয়ে ‘ওয়ান জিরো ওয়ান গুড প্র্যাকটিস ইন আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ’ এবং বাংলাদেশকে তুলে ধরতে ‘বাংলাদেশ হ্যারিটেজ বুক’ নামে দুটি গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং ঐতিহ্য এবং বদলে যাওয়া পোশাক খাত সম্পর্কে জানবে বিশ্ব। রাজধানীর বসুন্ধরায় বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টার (বিআইসিসি) থাকছে সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান। রোববার (১৩ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ রপ্তানি বাজার হিসেবে বড় দেশ এবং জোটের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এই আয়োজনে অংশ নেবেন। এ ছাড়া যেসব দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়, সেসব দেশের ব্র্যান্ড এবং ক্রেতা প্রতিনিধিরা থাকবেন। বর্তমানে ১৬০ দেশে যায় বাংলাদেশের পোশাক। বিশ্বের বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, জলবায়ুর অভিঘাত বিবেচনায় রেখে টেকসই উন্নয়ন, পোশাক বাজার সম্প্রসারণ, সরবরাহ চেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি হবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইকে’র মাধ্যমে। সব পক্ষ, বিশেষ করে সরবরাহ চেইনের বৃহত্তম অংশীদারদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা এই আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে একই পথনকশা তৈরি করা হবে। এতে কার কী দায়িত্ব থাকবে, সেটাও নির্ধারণ করা হবে।
মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের প্রধান অংশীদার বাংলাদেশ অ্যারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)। গোটা আয়োজনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে সংস্থাটি। জানতে চাইলে বিএইর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী মোস্তফিজ উদ্দিন বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই এত বড় আয়োজন খুব কমই হয়ে থাকে। এই আয়োজনের মাধ্যমে ভিন্ন এক বাংলাদেশকে দেখবে বিশ্ব। বিদেশি ৫৫০ জন ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিনিধি ঢাকায় আসছেন।
জানা গেছে, এ আয়োজনের মাধ্যমে মূলত ক্রেতাদের সামনে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া পোশাক খাতের সামর্থ্য তুলে ধরা হবে।