ইউনাইটেড এয়ারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপঃ বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর
নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারেওয়েজ লিমিটেডের বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর রয়েছে। কোম্পানিটির সারচার্জ মওকুফে অবশেষে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ের সচিবকে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মূল পাওনার ওপর আরোপিত সারচার্জ মওকুফের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ইউনাইটেড এয়ারেওয়েজের সারচার্জ মওকুফে বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম প্রস্তাব করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী সচিবকে বলেছেন, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সারচার্জ মওকুফ করতে। এর ফলে আবারও আকাশে ডানা মেলার স্বপ্ন দেখছে ইউনাইটেড এয়ার।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়ত-উল-ইসলাম কোম্পানিটির সারচার্জ মওকুপের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইউনাইটেড এয়ারের ৯৭ শতাংশ মালিক জনগণ। জনগণের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইউনাইটেড এয়ারের সারচার্জ মওকুফের জন্য বলেছি।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সারচার্জ অনেক হওয়ার কারণে কোম্পানিতে বায়ার আসছে না। তাই আসল বকেয়া দিয়ে সারচার্জ মওকুফের জন্য বলেছি, প্রধানমন্ত্রী উনার সচিবকে বলে দিয়েছেন বিমান মন্ত্রণালয়কে ইউনাইটেড এয়ারের সারচার্জ মওকুফ করতে এবং এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে।
এ বিষয়ে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী ওয়াহিদ-উল আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সাড়ে ৯৭ শতাংশের মালিক জনগণ। সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা করে এবং প্রতিষ্ঠানটিকে পুনরায় চালুর লক্ষ্যে বিএসইসিতে একটি পরিকল্পনা জমা দিয়েছি। বেবিচক সারচার্জ মওকুফ করলেই ব্যবসা শুরু করতে পারব। কারণ ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। সারচার্জ মওকুফ করলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা যাবে।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নজরুল ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, সারচার্জ মওকুফ না হলে পুনরায় প্রতিষ্ঠানটি চালানো সম্ভব নয়। কারণ ৫৫ কোটি টাকার সুদ ৩৫০ কোটি টাকা হয়েছে। এই কথা শুনে কোনো প্রতিষ্ঠানই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বর্তমানে ওভার দ্যা কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) রয়েছে। বর্তমানে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বকেয়া মোট পাওনা ৩৫৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫১ টাকা ৯৯ পয়সা। এর মধ্যে বেবিচকের আসল বা মূল পাওনা ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৪ হাজার ৮৮৩ টাকা ১৩ পয়সা। বাকি টাকার মধ্যে রয়েছে ভ্যাট ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ টাকা, আয়কর ২ লাখ ১২ হাজার ২০ টাকা ৬৯ পয়সা এবং সারচার্জ (বাৎসরিক ৭২ শতাংশ হারে) ২৯২ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার ৩ টাকা ১৭ পয়সা।
২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৮২ কোটি ৮০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৮০টি। এর মধ্যে ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে জনগণের হাতে আর মাত্র ২ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকের হাতে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের বাজার মূল্য বর্তমানে ২ টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮২৮ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার টাকা। আর অনুমোদিত মূলধন ১১০০ কোটি টাকা।