৫০-এর নিচে শুধু মুলা পেঁপে
প্রত্যাশা অনুযায়ী কমছেনা সবজির দাম
শাহ আলম নূর : বাজারের সস্তা সবজি শুধু মুলা আর পেঁপে। কারণ ভরা মৌসুমেও এই দুই পদের সবজি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না প্রতিকেজি ৫০ টাকার নিচে। বাজারের সে তালিকায় শুধু সবজি রয়েছে তা নয়, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোরও একই অবস্থা।
সবজির দাম কেমন জানতে চাইলে খিলগাঁও তালতলা সিটি কর্পোরেশনের কাঁচাবাজারে বিক্রেতা শফিক মিয়া বিষয়টি ধরিয়ে দিলেন। কারণ তিনি এক নিঃশ্বাসে বলেছিলেন, পেঁপে ৩০ আর মুলা ৪০ টাকা কেজি। আর বাকি সিজনের (শীতকালীন) সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আনসিজনেরগুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
ওই বাজারের অন্যান্য দোকান এবং আরো দু’টি বাজার ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। যদিও এখন বাজারে ভরপুর মৌসুমী সবজি রয়েছে। কিন্তু দাম কমছেনা। আবার নতুন করে বাজারে আসায় অনেক সবজির কেজি ১০০ বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বেশি দামে প্রয়োজনীয় সবজি কেনার সাধ্য অনেকেরই হচ্ছেনা।
সেগুনবাগিচা বাজারে নির্মাণ শ্রমিক আজিজ মিয়া বলেন, কয়েকজন মিলে এখানে একটি ভবনে থাকছি। নির্মাণ কাজ চলছে। মাছ-মাংস তো কিনে খাওয়া যায় না এখন দামের চোটে। নানা পদের সবজি খাব, সেই অবস্থাও নেই। শুধু মুলা আর পেঁপে খেতে হচ্ছে।
এদিকে সরবরাহ বাড়লেও দাম কেন কমছেনা এমন প্রশ্নের জবাবে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা মোকাম বা স্থানিয় বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখাচ্ছেন। সঙ্গে পরিবহণ ব্যয়, দোকান ভাড়া ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধিসহ তাদের অজুহাতের শেষ নেই।
কয়েকটি বাজারে যে দর তাতে দেখা যাচ্ছে, শীতকালিন সবজি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে শিম, একটি বড় সাইজের ফুলকপি, বাঁধাকপি, চালকুমড়া, পটল এগুলো। অন্যদিকে বরবটি, করলা, বেগুন, কচুর্মুখী, কাকরোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গার কেজি বাজারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পাকা বা আমদানি টমেটোর কেজি ১১০ থেকে ১২০, গাজর ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে এমন অস্বস্তি নিয়ে বেরিয়ে মুদি বাজারে গেলেও কোন সুখবর মিলছেনা ক্রেতার। বরং বাজারে আরেকদফা বেড়েছে চাল, তেল, আটা, ময়দার দাম। এতে সাধারণ মানুষ আরও বিপাকে পড়েছে।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে মোটা চালের দাম না বাড়লেও বেড়েছে চিকন চালের দাম। এ বাড়তির হিসেব টিসিবির থেকে নিলে দেখা যাচ্ছে, চিকন চালের কেজি ৩ টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মঝারি বা পাইজাম চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৫৪ থেকে ৬০ টাকা এবং মোটা চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও বাজারের খুচরা ব্যবাসয়ীরা বলছে, টিসিবির তথ্যের থেকে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
অপর দিকে প্যাকেট আটার কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দায় ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে সয়াবিন তেল ও চিনির দাম আরও বেড়েছে ১৭ নভেম্বর থেকে। এখন সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। আগের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি কেজিতে ১২ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০৭ টাকা। যদিও বাজারে নির্ধারিত দামের তেল পাওয়া গেলেও চিনি কিনতে গুনতে হচ্ছে আরো বেশি টাকা। সরবরাহ সংকট থাকায় বাজারভেদে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে ।