আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ নভেম্বর ২০২২, সোমবার |

kidarkar

‘কৃষকের কোমরে দড়ি, যাদের কাছে হাজার কোটি টাকা তাদের কিছু হয় না’

নিজস্ব প্রতিবেদক: একটি বেসরকারি ব্যাংকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেছেন, ২৫ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকের কোমরে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অথচ যাদের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা পাওনা তাদের কিছু করতে পারছেন না।

ঋণ আদায়ে ব্যাংকের চেক প্রতারণার মামলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হাইকোর্টের এক রায় স্থগিতে করা আবেদনের শুনানিতে সোমবার (২৮ নভেম্বর) এমন মন্তব্য করেন চেম্বার জজ আদালত।

গত ২৩ নভেম্বর এক রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ঋণ আদায়ে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলা করতে পারবে না।

এতে আরও বলা হয়, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য শুধু ২০০৩ সালের অর্থঋণ আইনের বিধান অনুযায়ী অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে পারবে।

চেক প্রতারণার অভিযোগে ব্র্যাক ব্যাংকের করা এক মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর দণ্ড বাতিলও করেন হাইকোর্ট।

এই রায় স্থগিতে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে চেম্বার আদালতে শুনানি করেন আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল বাকী।

শুনানির শুরুতে ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবীকে এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাইকোর্ট রায় দিয়ে বলেছেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না। নিম্ন আদালতে এ সংক্রান্ত বিচারাধীন সব মামলার রায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলা যাবে না।

আদালত এ সময় ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২৫ হাজার টাকার জন্য সাধারণ কৃষকের কোমড়ে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ যাদের কাছে লক্ষ-কোটি টাকা পাওনা তাদের কিছু হয় না।

আদালত আরও বলেন, যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার আছে চেক নেওয়াই যাবে না, সেখানে আপনারা (ব্যাংকাররা) ব্ল্যাঙ্ক চেক সই নিয়ে মামলা করেন। এসব চেকে কে টাকার অংক লেখে আর কে কলাম পূরণ করে তার কোনো হদিস থাকে না।

ঋণ দেওয়ার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া চেক সম্পর্কে বিচারক বলেন, এই চেকে কে সই করে, কে টাকার অংক বসায়, কে কলাম পূরণ করে তার কোনো হদিস নেই। এই চেক নেওয়া যাবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তার পরও ব্যাংকগুলো কেন মানছে না?

পরে আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আগামী ১ ডিসেম্বর শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.