আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৯ জানুয়ারী ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

২০২৫ সালে যুদ্ধে জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-চীন: মার্কিন জেনারেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগামী ২০২৫ সালে যুদ্ধে জড়াবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন বিমান বাহিনীর চার তারকাবিশিষ্ট জেনারেল মাইক মিনিহান। যুদ্ধের জন্য কমান্ডারদের প্রস্তুতিও নিতে বলেছেন ওয়াশিংটনের এই কর্মকর্তা। দ্য ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এয়ার মোবিলিটি কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইক মিনিহান বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রতিরোধ, প্রয়োজনে পরাজিত করা।’ মাইক মিনিহান তার স্বাক্ষরিত এক অভ্যন্তরীণ মেমোতে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন এই মেমোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এই মেমো। এই মেমো নিয়ে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে এনবিসি নিউজ। মেমো বা চিঠিটির তারিখ উল্লেখ আছে ১ ফেব্রুয়ারি।

ওই মেমোতে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এমন দুটি বিষয়ের শিরোনাম হচ্ছে ‘চূড়ান্ত পরিস্থিতি’ এবং ‘ঝুঁকি’। মিনিহান বলেন, ‘যা ভাবছি, আশা করি তা ভুল হবে। তবে আমার অনুমান বা ধারণা, ২০২৫ সালে আমরা চীনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বো।’

তিনি বলেন, চীন আগামী বছর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে নজর রাখবে কারণ তারা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে এই অঞ্চলে সামরিক আগ্রাসন বাড়ানোর একটি কারণ প্রস্তাব করবে। একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রেও নির্বাচন হবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রও নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। সেই সুযোগটি নিতে পারে চীন।

মিনিহানের উল্লেখ করা ‘চূড়ান্ত পরিস্থিতি’ শিরোনামে চীনের একটি দ্বীপপুঞ্জে হামলা চালিয়ে জয় লাভের কথা বলা হয়েছে। ওই দ্বীপপুঞ্জের বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলেননি তিনি। যেখানে দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বিদ্যমান।

মেমোতে এয়ার মোবিলিটি কমান্ড (এএমসি) ও অন্যান্য এয়ার ফোর্সের অপারেশনাল কমান্ডারসহ এয়ার উইং কমান্ডারদের সম্বোধন করা হয়েছে। সেই নির্দেশনায় বলা হয়েছে ‘আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদেরকে চীনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার জন্য প্রস্তুতিমূলক সব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জেনারেলকে জানাতে হবে।’

মার্চের মধ্যে জেনারেল এএমসি কর্মীদের ‘তাদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে এবং তারা আইনত প্রস্তুত কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের সার্ভিসিং বেস লিগ্যাল অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কর্মীদের প্রশিক্ষণে কিছু ঝুঁকির জন্য হিসাব করতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দৌড়ান, বেপরোয়াভাবে নয়। আপনি যদি প্রশিক্ষণে আপনার পদ্ধতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তবে আপনি যথেষ্ট ঝুঁকি নিচ্ছেন না।’

এএমসির প্রায় ৫০ হাজার পরিষেবা সদস্য ও প্রায় ৫০০টি প্লেন রয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে রসদ ও জ্বালানি সরবরাহের দায়িত্বও রয়েছে বিমানবাহিনীর ওপর।

জেনারেল মিনিহান ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাণিজ্যিক ড্রোনের ব্যবহারও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। চীনের সঙ্গে সংঘাত শুরু হলে এসব ড্রোনের ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

একটি প্লেন থেকে ১০০ চালকবিহীন ড্রোন (ইউএভি) সরবরাহ করা যায়, সে জন্য কেসি-১৩৫ ইউনিটগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেনারেল মিনিহান এগুলোকে নিজের দিক থেকে প্রথম আট মাসের নির্দেশনা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করে এএমসির এক মুখপাত্র বলেন, মেমোটি অধস্তন কমান্ড দলকে তার নির্দেশনা থেকে এসেছে। তার আদেশটি এয়ার মোবিলিটি কমান্ডের গত বছরের ভিত্তিতে প্রচেষ্টার ওপর তৈরি করা যাতে ভবিষ্যতের সংঘাতের জন্য মোবিলিটি এয়ার ফোর্সকে প্রস্তুত করা যায়।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন বিমানবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার এক বিবৃতিতে বলেছেন, চীনের সঙ্গে সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। শান্তিপূর্ণ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার দিকেই এখনও নজর যুক্তরাষ্ট্রের এমনটাও জানান তিনি।

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.