গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাড়ছে বেতন আসছে নতুন উদ্যোগ
শাহ আলম নূর : দেশের পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে নেয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হয়। এ লক্ষ্যে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মজুরি বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) শ্রমিক ও কারখানা মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের নামের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে শ্রমিক প্রতিনিধির নাম পাঠিয়েছি। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন হবে।”
পোশাক শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের বিষয়ে তাদের প্রতিনিধির নামের তালিকা চেয়ে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “আমরা চিঠি পেয়েছি। ধারণা করছি, সহসাই নতুন মজুরি বোর্ড গঠন হবে।”
তিনি বলেন, “গ্যাস-বিদ্যুতের দাম একের পর এক বাড়ছে। আগামীতে আরো বাড়ে কিনা, সে দুশ্চিন্তায় আছি। এমন অবস্থায় নতুন মজুরি আমাদের উপর ফের বাড়তি চাপ তৈরি করবে।”
তৈরি পোশাক শিল্পে বর্তমানের ৪০ লাখের মতো শ্রমিক কাজ করেন। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের শুরুর দিকে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয় এবং ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে শ্রমিকদের ন্যূনতম ৮ হাজার নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়।
অবশ্য দেশে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিকহারে বাড়তে থাকায় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি উঠতে থাকে। এ দাবিতে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানীর মিরপুর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় শ্রম অসন্তোষও দেখা দেয়।
এছাড়া গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করে আসছে।
চলতি মাসে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে শ্রমিকদের সাতটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম নতুন মজুরি বোর্ড গঠন ও শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২২ হাজার করার দাবি জানায়।
নতুন গঠিত এ সংগঠনের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “ক্রমাগত পণ্যমূল্য বাড়ছে এবং গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এর ফলে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় সরকারের নতুন মজুটি বোর্ড গঠনের উদ্যোগকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখি।” তবে বোর্ডে শ্রমিকদের পক্ষে যথাযথ প্রতিনিধি থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
অবশ্য পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ার পর রপ্তানি বাজারে তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমতির দিকে। এ অবস্থায় নতুন মজুরি তাদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।