৬ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১২’শ কোটি ডলার
নিজস্ব প্রতিবেদক : রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় কিছুটা বাড়লেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১০৫ টাকা ধরে এর পরিমাণ ১ লাখ ২৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। রফতানি আয়ের চেয়ে আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় এই বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৩ হাজার ৮১৩ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে রফতানি হয়েছে ২ হাজার ৫৮৩ কোটি ডলারের পণ্য। এতে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩০ কোটি ডলার।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে সেবাখাতে দেশ আয় করেছে ৪৫৫ কোটি ডলার। অন্যদিকে, সেবাখাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ৬৫০ কোটি ডলার। এতে সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯৫ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৬৮ কোটি ডলার। যেকোনো উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। তবে বাংলাদেশের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
আমদানির তুলনায় রপ্তানি অনেক কম হচ্ছে। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রবাসী আয়ে ছিলো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। একইসঙ্গে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্যে ছিলো ঊর্ধ্বমুখী। এসবের প্রভাবে দেশ বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ছে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর শেষে এ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২৭ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ৮২৯ কোটি ডলার। এদিকে, ডিসেম্বর শেষে সামগ্রিক লেনদেনে ঘাটতি ৭১৬ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৭৯ কোটি ডলার। অন্যদিকে, একই সময়ে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ২৩২ কোটি ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে ২৬২ কোটি ডলারে উঠেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।