যুব গেমসে ‘চ্যাম্পিয়ন’ চট্টগ্রাম
স্পের্টস ডেস্ক : কামাল যুব গেমস মূলত ভবিষ্যত তারকার মঞ্চ। খেলোয়াড় সন্ধানের গেমস হলেও দিন শেষে পদকের লড়াইটাও মূখ্য। চূড়ান্ত পর্বের প্রথম চার দিন খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে শীর্ষস্থান দখলের ত্রিমুখী লড়াই ছিল। শেষ দু’দিন লড়াইটা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে। আজ শেষ দিনে উশু এবং অ্যাথলেটিক্সে স্বর্ণ জিতে ঢাকা বিভাগকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম।
এই গেমসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার পদক সংখ্যা ৪৯টি। তিনটি স্বর্ণ কম নিয়ে ঢাকা বিভাগের অবস্থান দ্বিতীয়। তিনটি স্বর্ণে ঢাকা পিছিয়ে থাকলেও দুই বিভাগের মোট পদক সমান ১৪৬।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে চট্টগ্রামের অবদান বরাবরই বিশেষ অবস্থানে। যুব গেমসে চট্টগ্রামের শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ হলো বলে মনে করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে ধন্যবাদ। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় আমাদের এই অর্জন। চট্টগ্রাম বিভাগের এই সন্তানরা আগামীতে দেশকে আরো সুন্দর কিছু উপহার দেবে সেই লক্ষ্যে ভবিষ্যতে কাজ করব। চট্টগ্রাম বিভাগে ক্রীড়াঙ্গনে কাজ হয় এটাও এর একটা দৃষ্টান্ত। ‘
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম যুব গেমসে চট্টগ্রাম পদক তালিকায় তৃতীয় ছিল। এবার প্রথম হওয়ার সাফল্যের নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে চট্টগ্রামের বিভাগীয় সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলাধূলায় সাফল্যের জন্য প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনার বিকল্প নেই। আমরা চুড়ান্ত পর্বের জন্য ৫৩১ জন খেলোয়াড়কে প্রায় এক মাস প্রশিক্ষণ করিয়েছি। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন যে বরাদ্দ দিয়েছিল তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ অর্থ আমরা ব্যয় করেছি প্রশিক্ষণে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির ভাই সহ অনেকে আমাদের সহায়তা করেছেন এই কার্যক্রমে। সর্বোপরি খেলোয়াড়দের মেধা,আন্তরিকতা এবং আমাদের প্রচেষ্টায় এই সাফল্য। ‘
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা শুধু মাঠের পারফরম্যান্সেই নয়, আয়োজনেও অন্য জেলার চেয়ে এগিয়ে ছিল। শেখ কামাল যুব গেমসে জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় দারুণ অনুষ্ঠান করেছিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা। বান্দরবান জেলায় অনুষ্ঠিত অনুষ্টানটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল সবার। বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্য শৈ হ্লা বান্দরবানেরই একজন ক্রীড়া সংগঠক। চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৯ স্বর্ণের মধ্যে ৫ টি স্বর্ণ এনে দিয়েছেন এই জেলার সন্তানরা, ‘অনেক বিভাগের চেয়ে আমাদের জেলার স্বর্ণ বেশি। একটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার খেলার (কারাতে) মেধাবীদের প্রশিক্ষণে রাখার চেষ্টা করব’।
ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা চট্টগ্রামের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিল। আজ অ্যাথলেটিক্স ইভেন্ট শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সম্ভাবনা ছিল ঢাকার প্রথম হওয়ার। অ্যাথলেটিক্সে কোনো স্বর্ণ না পাওয়ায় ঢাকাকে দ্বিতীয় থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
‘প্রথম হওয়ার খুব কাছে গিয়েছিলাম আমরা। গতবারের চেয়ে পদক তালিকায় পারফরম্যান্সের উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে প্রাপ্ত মেধাবীদের পরিচর্যা করাই আমাদের পরবর্তী দায়িত্ব’ বলেন ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ মোল্লা।
যুব গেমস মূলত ভবিষ্যত খেলোয়াড় তৈরির মঞ্চ হলেও পদকের জন্য প্রতিটি বিভাগ লড়েছে মনে-প্রাণে। পদক অর্জনের জন্য একে অন্যের দিকে অতিরিক্ত বয়স , স্বজনপ্রীতি সহ নানা অভিযোগ পারস্পরিকভাবে উঠেছিল। দুই একটি ডিসিপ্লিনের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদে গত আসরের তুলনায় এবারের আয়োজন অনেকটাই গোছালো ও সুন্দর হয়েছে বলে ধারণা সকলের।