আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

নীতি বদল না হলে সংঘাতের ঝুঁকি আছে, যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি চীনের

নিজস্ব প্রতিবেদক : চীনকে দমনপীড়নের ভুল নীতি পরিবর্তন না হলে সংঘাতের ঝুঁকি আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে বেইজিং। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ভুল নীতি পরিবর্তন করা উচিত নয়তো ‘সংঘাত ও সংঘর্ষ’ সৃষ্টি হবে।

এছাড়া ইউক্রেনে চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে বেইজিংয়ের আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং। সেখানে তিনি বলেন, ন্যায্য বা নিয়ম-ভিত্তিক প্রতিযোগিতার পরিবর্তে চীনকে দমন ও নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যস্ত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি বলেন, ‘চীন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গি গুরুতরভাবে বিকৃত। যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তার প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচনা করে থাকে। এটি শার্টের প্রথম বোতামটি ভুলভাবে লাগানোর মতো।’

তাইওয়ান, বাণিজ্য এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তির মধ্যকার সম্পর্ক কয়েক বছর ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক বেলুনকাণ্ডের পর উভয় দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বিতর্ক সৃষ্টি করা বেলুনটি চীনা গুপ্তচরবৃত্তিতে নিযুক্ত ছিল এবং আর তাই গত মাসে সেটিকে তারা ভূপাতিত করে।

কিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে সম্পর্ককে নিরাপদ করার চেষ্টা করছে এবং (বেইজিংয়ের সঙ্গে) সংঘাত চাইছে না বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু বাস্তবে এর অর্থ হলো- কোনও ধরনের অপবাদ বা আক্রমণের শিকার হলে কথা বা পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবে না চীন।’

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি পুরোপুরি অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র যদি না থামে এবং ভুল পথে গতি বাড়িয়ে চলতেই থাকে, তাহলে কোনও নিরাপত্তা পাহারাই (যুক্তরাষ্ট্রকে) লাইনচ্যুত হওয়া থেকে রোধ করতে পারবে না, যা কার্যত সংঘাত ও সংঘর্ষে পরিণত হবে। এর ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়কর পরিণতি কে বহন করবে?’

মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে কিন আরও বলেন, ‘অদৃশ্য একটি হাত’ ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মাত্রা আরও বৃদ্ধির জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে এই কথার মাধ্যমে তিনি ঠিক কাকে ইঙ্গিত করছেন সেটি উল্লেখ করেননি।

যুদ্ধ বন্ধে সংলাপের জন্য চীনের আহ্বান আবারও পুনর্ব্যক্ত করে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং বলেন, ‘কিছু ভূ-রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ‘অদৃশ্য হাত’ ইউক্রেন সংকটকে ব্যবহার করছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল।

উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন।

তবে রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থানকে বেশ জোরালোভাবেই সমর্থন করছে চীন। যদিও রুশ আক্রমণকে আগ্রাসন না বলায় পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.