গতি ফিরেছে পুঁজিবাজারে,বাজার মূলধন বেড়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দরপতন আর লেনদেন খরার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বাজার মূলধন। এক সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়ে গেছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা।
বড় অঙ্কের বাজার মূলধন বাড়ার সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৫৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৮৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ৮০ দশমিক ১২ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৭৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৭৯১ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ। মোট লেনদেন কম হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৩৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির। আর ২২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৮ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ১০ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ।
অন্যদিকে প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি টানা দুই সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১১ শতাংশ।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৭ কোটি ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা। ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অপরদিকে, সিএসইতে লেনদেনে ছিল একই চিত্র। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ১৬৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৪৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৮ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৯ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার ৮১৩ টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৩টির, কমেছে ১১টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ৩৩টির, কমেছিল ৯৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০৩টি কোম্পানির শেয়ার।
শেয়ারবাজার নিউজ/খালিদ