মার্কিন ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আজ, নজর রাখছে বিশ্ব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধ-বিগ্রহ ও বৈশ্বিক অস্থিরতাসহ নানান কারণে বর্তমানে কঠিন সমস্যা মোকাবিলা করছে বিশ্ব অর্থনীতি— আর এমন সময়ে এখন সবার নজর এক দিকে, সেটি হলো যুক্তরাষ্ট্রে।
গত ১৫ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। আর এ কারণে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার বৃদ্ধির পরই যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি বন্ধ হয়ে গেছে। সুদহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম। আর এ সুদহার বৃদ্ধির বিষয়টি পুরো বিশ্বকে ধাক্কা দিয়েছে, বাড়িয়ে দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা।
বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের লাগাম টানতে গত বছর থেকে সুদহার বৃদ্ধি করে যাচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম। মার্কিন ব্যাংকিং খাতের এ নিয়ন্ত্রক ব্যাংক জানিয়েছে, সুদহার বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। আজ বুধবার (২২ মার্চ) এ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানাবে ফেডারেল রিজার্ভ।
তবে প্রশ্ন হলো, যখন অর্থনীতির ঝুঁকি বেড়েই চলছে, তখন ফেডারেল রিজার্ভ কী এটি অব্যাহত রাখতে পারবে?
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল জানান, ব্যাংককে হয়ত সুদহার বৃদ্ধি করেই যেতে হবে। এমনকি সুদহার যে পরিমাণ ও যে সময়ের মধ্যে বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটি তারও কম সময়ের মধ্যে হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, মুল্য নিয়ন্ত্রণ রাখার কার্যক্রম থমকে যাচ্ছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ১২ মাসে দ্রব্যপণ্যের মূল্য ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে— যা স্বাভাবিক ২ শতাংশ বৃদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি।
তবে বিনিয়োগকারীদের ধারণা, ব্যাংকিং খাতে যে অস্থিরতা চলছে সেটির মধ্যে বর্তমান অর্থনৈতিক বাজারকে উপেক্ষা করে ফেডারেল রিজার্ভ বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।
কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করছেন, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজ সুদহার নতুন করে ০ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি করতে পারে। আবার এক পয়েন্টও না বাড়াতে পারে।
তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক, ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল তার সমালোচকদের সন্তুষ্টি করতে পারবেন, এমন সম্ভাবনা কম।
অক্সফোর্ড ইকোনোমেকিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রায়ান সুইট বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভের জন্য এটি সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে।’ রায়ান সুইটের ধারণা, সুদহার ০ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে।
তিনি আরও বলেছেন, ‘পাওয়েলকে অর্থনীতি নিয়ে দুই হাতে খেলতে হবে। বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে হবে তিনি এক হাতে সুদহার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করতে পারবেন। অপরদিকে অন্য হাত ব্যবহার করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার চাপ মোকাবিলা করতে পারবেন।’
‘তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটি হতে যাচ্ছে, যেটি হলো যোগাযোগ। আর এক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভের পূর্ব ইতিহাস ভালো নয়।’ বলেছেন রায়ান সুইট।