মহামারীর পর জেএমআই সিরিঞ্জের ব্যবসায় মন্দা
শাহ আলম নূর : মহামারিতে ব্যবসা বাড়লেও বর্তমানে বেশ খরাপ সময় পার করছে সিরিঞ্জ এবং মেডিকেল ডিভাইস উৎপাদন কারি প্রতিষ্ঠান জেএমআই সিরিঞ্জ লি:। মহামারীর চলে যাওয়ার পর থেকে জেএমআই সিরিঞ্জের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।
জেএমআই সিরিঞ্জ এবং মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেড সিরিঞ্জ এবং মেডিকেল ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠানটি অটো-ডিজেবল (অউ) সিরিঞ্জ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিল।
প্রকল্প গ্রহনের পর দুই বছর কেটে গেলেও পুঁজি বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি এখনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যদিও কোম্পানির কর্মকর্তারা দাবি করছেন প্রকল্পের এগিয়ে চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, কোভিড-১৯ সময়কালে কোম্পানির ব্যবসা যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল এখন আর তা অব্যাহত নেই। এজন্য গৃহীত প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই ধীরগতিতে এগিয়ে চলছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে তারা অটো ডিজাবেল (এডি) সিরিঞ্জ উৎপাদন ক্ষমতা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করতে ৫ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে। কারণ কোভিড-এর কারণে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা বেড়েছে। কারন হিসেবে বলা হয়েছে ১৯ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে এসব সরঞ্জামের বিকল্প নেই।
এ সময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর শুধুমাত্র ০.৫ এমএল অটো-ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে প্রায় ৩৩ শতাংশ।
জেএমআই সিরিঞ্জের কোম্পানি সেক্রেটারি তারেক হোসেন খান বলেছেন, মহামারী চলাকালীন সময়ে যে ক্রমবর্ধমান ব্যবসা ছিল, বর্তমান সময়ে তা আর নেই। “প্রকল্পের অধীনে বেশ কয়েকটি মেশিন কেনা হয়েছে এবং আরও কিছু মেশিন পথে রয়েছে।”
তবে নতুন প্রকল্পের উৎপাদন কবে থেকে শুরু হবে সে বিষয়ে সঠিক কোনো ধারণা দিতে পারেননি তারেক হোসেন। এছাড়াও, পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির কারণে ২০২১-২২ অর্থ বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় কমেছে।
মেডিকেল ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে আয় কমেছে ৭ শতাংশ। একই সাথে এর নিট মুনাফা কমেছে ৫৪ শতাংশ।
জেএমআই সিরিঞ্জ এবং মেডিকেল ডিভাইস উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য ৩৬ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে যার মাধ্যমে এর পরিশোধিত মূলধন ২২.১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩০.০৫ কোটি টাকা হয়েছে।
কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০২২-২৩ অর্ত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ০.৯৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২.১৩ টাকা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানির স্বল্পমেয়াদী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১.৬৯ কোটি টাকা, যার দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ছিল ১৩ লাখ টাকা।
২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্পন্সর এবং পরিচালকদের কোম্পানিতে ৭৯.৬৫ শতাংশ শেয়ার ছিল, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এবং সাধারণ জনগণের মালিকানা ছিল যথাক্রমে ৩.১১ শতাংশ এবং ১৭.২৪ শতাংশ।
বুধবার ডিএসই ট্রেডিং ফ্লোরে কোম্পানিটির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল ২৫৫.৫ টাকায়।