আজ: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

৮ বিভাগেই তাপপ্রবাহ, ৫ দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়েছে। রংপুর বিভাগেও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এতে পুরো দেশে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়লো।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। একদিন আগে যা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ঢাকায়ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আট বছর পর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হলো।

আগামী ৫ দিনের মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট বিভাগ) ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অন্যদিকে, আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী ১৬ এপ্রিলের পর থেকে সীমিত পরিসরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে হালকা বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মূলত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। এতে তাপপ্রবাহ দূর হতে থাকবে।

কয়েক কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমে বেড়ে এখন চরম আকার ধারণ করেছে। আরও ৬ জেলা ছাড়াও পুরো খুলনা বিভাগের ওপর নিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তীব্র গরমের কারণে জনজীবনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হচ্ছে। রমজান মাস চলায় মানুষের কষ্ট যেন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

গত ৪ এপ্রিল দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। টানা ১১ দিন ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। এ সময়ে ক্রমে তাপপ্রবাহের তীব্রতা যেমন বেড়েছে, তেমনি আওতাও দেশজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে মরুভূমির মতো গরম প্রায় দেশজুড়ে। দিনে গরমের তীব্রতা থাকলেও রাতে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। সকালে কোথাও কোথাও কুয়শাও পড়ছে। দিনের তাপমাত্রা ৪০ পার হলেও রাতে কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে।

শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল তেঁতুলিয়ায়। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকায় দুঃসহ গরমের সঙ্গে ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে, চড়চড় করছে ত্বক।

টানা দাবাদাহের কারণে মানুষের পেটের পীড়া দেখা দিচ্ছে। জ্বরেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। রোদের প্রচণ্ড চাপে কোথাও কোথা সড়কের পিচ গলে যাওয়ার খবর আসছে। এরই মধ্যে রোদের তাপে যশোরে একটি সড়কের গলে যাওয়া পিচের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রিকে মৃদু, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রিকে মাঝারি ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার খুলনা বিভাগসহ ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা ও পটুয়াখালী জেলান ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানান আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল (পলাশ) জানান, আগামী ১৭ ও ১৮ এপ্রিল বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোন কোন জেলায় দুর্বল কালবৈশাখী ঝড়সহ খুবই হালকা পরিমাণ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২১ এপ্রিলের পর থেকে রাতে প্রায় প্রতিদিন সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের মেঘালয় পর্বত সংলগ্ন জেলাগুলোতে বজ্রপাতসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘২৩ এপ্রিলের পর থেকে ৩ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির শুরুর সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ। ১৭ ও ১৮ এপ্রিল সামান্য পরিমাণ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ওপর তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা প্রবল।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.