সুদানে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুদানে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১৮০০ জন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, রাজধানী খার্তুম এবং দেশের অন্যান্য স্থানে লড়াই চলছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে বিমানবন্দরের কাছে সেনা সদর দফতরের চারপাশেও লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের কেন্দ্রে থাকা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল ২৪ ঘন্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। তাদের নেতৃত্বাধীন দুই বাহিনী এই সংঘাতের জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে। এদিকে টানা কয়েকদিনের সংঘাতের কারণে দেশটিতে খাদ্য সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। বুধবার সকালে খার্তুমে বসবাসকারী এক নারী জানান, তার বাড়িতে খাওয়ার মতো আর এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট নেই।
তিনি বলেন, বেশির ভাগ মানুষই তাদের বাড়ি-ঘরে বুলেট এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মারা গেছেন। এদিকে জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান সতর্ক করেছেন যে, সংস্থাটির মানবিক কর্মীরা হামলা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
অল্প কিছুদিন আগেও এই দুই সামরিক নেতার মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতা থেকে সরাতে তারা দুজন একসাথে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
কিন্তু এক পর্যায়ে আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েই এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বিশেষ করে সুদানের ভবিষ্যৎ এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে তারা ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেন।
এর আগে দেশটিতে বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সংলাপও ব্যর্থ হয়।
এদিকে সোমবার দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কূটনৈতিক বহরে গুলি চালানো হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি এই ঘটনাকে বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অনিরাপদ বলে উল্লেখ করেছেন। এর আগে সুদানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ দূত আইদান ও’হারা রাজধানী খার্তুমে নিজ বাড়িতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।