বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশ-জাপান ১১ সমঝোতা স্মারক সই
নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে ১১ টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ ও জাপান।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জেসিসিআই এবং এফবিসিসিআই অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ ও জাপানের বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে ১১টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বিনিময় করা হয়।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম সম্মেলনে একটি প্রেজেন্টেশন দেন।
১১টি সমঝোতা স্মারক
১.দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান, ইভেন্টে অংশগ্রহণ এবং উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অভিন্ন বাধা চিহ্নিত করে দুই দেশের ব্যবসায়িক গ্রুপের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও ফলপ্রসূ যোগাযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একে অপরকে সহযোগিতা করবে জেসিসিআই এবং এফবিসিসিআই। এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই করে জাপান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (জেসিসিআই) এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
২. বাংলাদেশে লায়ন কল্লোল লিমিটেড (“LKL”) এর ব্যবসা আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে লায়ন এবং বিএসইজেড (বাংলাদেশ এসইজেড) বিএসইজেডে জমি বরাদ্দে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
৩. চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি উচ্চ-দক্ষতা সম্পন্ন ৭০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উন্নয়ন, নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য জাপানের ইতোচু এবং বাংলাদেশের KEPCO এ্যান্ড AKH পিপি প্রজেক্ট একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
৪. নতুন সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে যৌথ বিনিয়োগ ও উন্নয়নে জাপানের মারুবেনি এবং বাংলাদেশের ডোরিন গ্রুপের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
৫. একটি ব্যবসায়িক এবং মূলধন জোট গঠনের লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগ নিতে জাপানের মারুবেনি এবং বাংলাদেশের বিজেআইটি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
৬. বাংলাদেশে একটি জাপানি স্ট্যান্ডার্ড ডেন্টাল ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠার জন্য যৌথ উদ্যোগ নিতে জাপানের মেদিনা ডেন্টাল কোম্পানি এবং বাংলাদেশের AICHI হেলথ কেয়ার গ্রুপের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
৭. বাংলাদেশে বসানো ২০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাসমান ও গ্রাউন্ডের যৌথ উন্নয়নে জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশের পার্কার বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
৮. বাংলাদেশে একটি নতুন সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে জাপানের পাইপলাইন এবং বাংলাদেশের ইরো ভিজিলের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
৯. বাংলাদেশে জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি যৌথ উদ্যোগ গঠনে জাপানের জেরা এবং বাংলাদেশের সামিট গ্রুপের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১০. পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এজেন্সি (FSA) জাপান এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে এক্সচেঞ্জ অব লেটার (ইওএল) স্বাক্ষরিত হয়।
১১. আইসিটি শিল্পের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সদস্যদের মধ্যে জ্ঞান আদান-প্রদান এবং ব্যবসায়িক আদান-প্রদান ও পারস্পরিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে Japan Information Technology Services Industry Association (JISA) এবং Bangladesh Association of Software & Information Services (BASIS) এরমধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকালে টোকিও’র একটি হোটেলে বাছাই করা জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি অব্যহত রাখবো এবং বাংলাদেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে সবারজন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবো।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জাপানি ব্যবসা ও বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা মহামারির চাপের মধ্যেও বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে, বিশেষ করে ২০১৪ সালে দুই দেশে যখন ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ এবং বিগ-বি উদ্যোগে প্রবেশ করি।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, তিনি নিশ্চিত জাপানি ব্যবসায়ীরাও এই ক্রমবর্ধমান এই ধারা অনুসরণ করছেন এবং তারা তাদের বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণ করবেন, বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা খুলবেন।