আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ মে ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক এক বছরে প্রথম বাড়ল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক দাম গত মাসে এক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক মূল্যসূচক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। চীনসহ শীর্ষ অর্থনীতিগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় মূল্যসূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

রাশিয়া গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে সব পণ্যের দাম। মার্চে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলে। তবে এর পর প্রতি মাসেই খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক কমেছে। এবার প্রথমবারের মতো দাম বাড়লেও তা রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ের ২০ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে।

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া খাদ্যপণ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতি মাসে মূল্যসূচক তৈরি করে এফএও। সূচকটি গত মাসে বেড়ে ১২৭ দশমিক ২ পয়েন্টে পৌঁছে, যা মার্চে ছিল ১২৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট।

রোমভিত্তিক সংস্থাটি জানায়, দানাদার খাদ্যশস্য, ‍দুগ্ধপণ্য ও উদ্ভিজ্জ তেলের দাম গত মাসে কমেছে। কিন্তু চিনি, মাংস ও চালের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি সূচককে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলেছে।

এফএওর শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো বলেন, ‘‌বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলো বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে চীন জিরো কভিড-১৯ নীতি থেকে সরে আসায় দেশটিতে খাদ্যপণ্যের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করেছে, যা খাদ্যপণ্যের দামকে ঊর্ধ্বমুখী চাপে ফেলছে।’

এফএওতে গত মাসে চিনির মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০১১ সালের অক্টোবরের পর এটিই সর্বোচ্চ দাম। চীন ও ভারতে চিনি উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহে টান পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় প্রত্যাশার তুলনায় কম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এ দুটি বিষয় ভোগ্যপণ্যটির দাম বাড়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে অপরিশোধিত চিনি ১১ বছরের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। ভারতে চিনির দাম টানা চতুর্থ মাসের মতো বেড়েছে।

অন্যদিকে মাংসের মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে দুগ্ধপণ্যের দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ। উদ্ভিজ্জ তেলের দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। দানাদার খাদ্যশস্যের দাম কমেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে চালের দাম লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে।

ম্যাক্সিমো টোরেরো বলেন, ‘‌গম ও ভুট্টার মূল্যবৃদ্ধি রুখতে কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য রফতানি চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চালের লক্ষণীয় মূল্যবৃদ্ধি ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।’

দানাদার খাদ্যশস্যের সরবরাহ ও চাহিদা শীর্ষক ভিন্ন একটি প্রতিবেদনে এফএও জানায়, চলতি বছর বিশ্বজুড়ে ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টন গম উৎপাদন হবে, যা গত বছরের চেয়ে কম। ২০২২-২৩ মৌসুম শেষে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ দশমিক ২ শতাংশ কমার পূর্বাভাসও দিয়েছে এফএও।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.