রাশিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ পুতিনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের আদেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মূলত মস্কোর নিয়ন্ত্রণাধীন ইউক্রেনীয় অঞ্চলে ‘দ্রুত’ রুশ সামরিক ও বেসামরিক চলাচল নিশ্চিত করতে এই নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের ভেতর থেকে সশস্ত্র দল রাশিয়ার বেলগোরদ অঞ্চলে ঢুকে সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার ঘটনার পর এই নির্দেশনা সামনে এলো। রোববার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কোর নিয়ন্ত্রণাধীন ইউক্রেনীয় অঞ্চলে ‘দ্রুত’ রুশ সামরিক ও বেসামরিক চলাচল নিশ্চিত করতে রোববার রাশিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রয়টার্স বলছে, বর্ডার গার্ড দিবসে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) অধীনস্ত সীমান্ত পরিষেবাকে অভিনন্দন বার্তা দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, তাদের কাজ হচ্ছে যুদ্ধ অঞ্চলের আশপাশের সীমানা ‘নির্ভরযোগ্যভাবে সুরক্ষিত’ করা।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানত রুশ সীমান্ত বরাবর অঞ্চলগুলোতে ড্রোন হামলার পাশাপাশি দেশের বেশ গভীর এলাকায়ও ক্রমবর্ধমানভাবে হামলা হয়েছে। এছাড়া শনিবার মস্কোর উত্তর-পশ্চিমে একটি তেল পাইপলাইনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ক্রেমলিনের টেলিগ্রাম মেসেজিং চ্যানেলে পোস্ট করা এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ‘(রাশিয়ান) ফেডারেশনের নতুন এলাকাগুলোতে পাঠানো খাদ্য, মানবিক সহায়তার নির্মাণ সামগ্রীসহ সামরিক ও বেসামরিক যানবাহন এবং কার্গো যানবাহন উভয়ের দ্রুত চলাচল নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝিয়া, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক অঞ্চল অধিগ্রহণ করেন। মূলত গণভোটের পর পুতিন এই চারটি অঞ্চল অধিগ্রহণের ঘোষণা দেন। যদিও রুশ বাহিনী শুধুমাত্র আংশিকভাবে এই চারটি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে বলে শোনা যায়।
শনিবার কর্মকর্তারা বলেছেন, বেলগোরোদে ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে তিনজন আহত হয়েছেন। এর আগে চলতি সপ্তাহে এই অঞ্চলটি ইউক্রেনপন্থি যোদ্ধাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। আর এটিই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা এবং সামরিক সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ান অঞ্চলগুলোর মধ্যে কুরস্ক এবং বেলগোরোদ সবচেয়ে ঘন ঘন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এসব হামলায় বিদ্যুৎ, রেল এবং সামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর জন্য স্থানীয় কর্মকর্তারা ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন।
কিয়েভ প্রায় কখনোই প্রকাশ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তরে এবং ইউক্রেনের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে দেশটি বলেছে, রুশ অবকাঠামো ধ্বংস করা তার পরিকল্পিত স্থল হামলার প্রস্তুতির অংশ।
এদিকে দখলকৃত অঞ্চলগুলো থেকে রাশিয়ার সেনাদের হটিয়ে দিতে পাল্টা আক্রমণ শুরুর জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত আছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শনিবার জানিয়েছেন ইউক্রেনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওলেক্সি ড্যানিলভ।
তবে কখন কোন সময় এ পাল্টা আক্রমণ শুরু হবে সেটির কোনও নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি ড্যানিলভ। তবে তিনি বলেছেন, পুতিনের দখলদার সেনাদের কাছ থেকে নিজেদের ভূখণ্ড ফিরিয়ে নিতে ‘কাল, পরশু বা এক সপ্তাহের মধ্যে’ তাদের অভিযান শুরু হতে পারে।