ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ দিতে প্রাণপন চেষ্টা করছে লুব-রেফ
নিজস্ব প্রতিবেদক : লুব- রেফ বাংলাদেশ লি: বিএনও ব্র্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান। তারল্য ঘাটতির কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ১০ নগদ লভ্যাংশ দিতে লড়াই করছে প্রতিষ্ঠানটি।
তথ্যে দেখা যায় এখন পর্যন্ত, কোম্পানিটি যোগ্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পেরেছে। কোম্পানির কার্যক্রমের জন্য কাঁচামাল আমদানিতে অতিরিক্ত তহবিল ইনজেকশনের কারণে সংকট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) লভ্যাংশ ইস্যু, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) তহবিলের ব্যবহার, বোর্ড ও ব্যবস্থাপনার ভূমিকা এবং তালিকাভুক্তির পর থেকে কোম্পানির প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি পরিচালনা করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তদন্ত দলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান এবং উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক একেএম ফারুক আলম। বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে যারা এখনও ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য লভ্যাংশ পায়নি। তদন্ত দল ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সমস্ত নির্ধারিত বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবে।
কোম্পানির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, কোম্পানি ধাপে ধাপে ডিভিডেন্ড ক্লিয়ার করছে। এখন পর্যন্ত, যোগ্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫০ শতাংশ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন বর্তমান পরিস্থিতিতে লুব্রিকেন্ট উৎপাদনকারী তারল্য সংকটের সম্মুখীন হওয়ায় কোম্পানি ধীরে ধীরে প্রস্তাবিত লভ্যাংশ প্রদান করছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোম্পানিটির কাঁচামাল আমদানির জন্য দুই বা তিনগুণ তহবিল ইনজেক্ট করতে হবে কারণ বিশ্বব্যাপী তাদের দাম বেশি। এছাড়া ডলার সংকটের কারণে কোম্পানিটি বড় এলসির অনুমতি পাচ্ছে না। তিনি বলেন সংস্থাটি এখন তার স্বাভাবিক ক্ষমতার প্রায় ৩০% উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই তার অবশিষ্ট আইপিও তহবিলকে কার্যকরী মূলধন হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করেছে, কারণ এটি কার্যকরী মূলধনের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে।
লুব্রিকেন্ট রি-রিফাইনার এবং ব্লেন্ডার ২০২১ সালে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। কোম্পানিটি সম্প্রসারণের জন্য ৯৮ কোটি টাকার মেশিনারি কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তার যন্ত্রপাতি তহবিলের মাত্র ৪৬ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের আইপিও প্রকল্প শেষ করতে পারেনি।
মফিজুর রহমান বলেন, বেস অয়েল রিফাইনারি প্রকল্পের ব্যয় ১৫০ কোটি টাকা আইপিও ফান্ডসহ ১ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মধ্যে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ এবং ৭৫০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ যা প্রকল্পের এলসি হিসেবে ব্যবহার করার কথা ছিল।
কিন্তু বৈশ্বিক সংকট ও স্থানীয় তারল্য সংকটের কারণে সেসব ঋণ বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে এখন আইপিও প্রকল্প চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও, কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ১৭ শতাংশ বার্ষিক মুনাফা বৃদ্ধি করেছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিক পর্যন্ত কোম্পানির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৬.৭৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫.৭৬ কোটি টাকা। এর আয় এক বছর আগের তুলনায় ৩৬.৬৬ কোটি টাকা থেকে ৮ শতাংশ কমে ৩৩.৭৫ কোটি টাকা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে শেয়ার বাজারে এসেছে। ৩১ মে ২০২৩ পর্যন্ত, স্পনসর এবং পরিচালকরা যৌথভাবে কোম্পানিতে ৩৫.৭০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারিদের ২৪.৮৪ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারী ০.০৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারিদের ৩৯.৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।