আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৮ জুন ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ‘অদম্য’ প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে যৌথভাবে ‘অদম্য’ (ঙউঙগগঙ) প্রকল্প গ্রহণ করেছে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং মালালা ফান্ড। গত শনিবার (১৭ জুন) কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। আগামী নভেম্বর-২০২২ থেকে শুরু করে এ প্রকল্প চলবে ২০২৫ পর্যন্ত।

উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- মালালা ফান্ড, বাংলাদেশের প্রতিনিধি মোশাররফ তানসেন, জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ প্রমুখ।

প্রকল্পটি বাংলদেশে শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়া মেয়ে শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার একটি প্রয়াস। জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, লিঙ্গ বৈষম্যর মতো বিভিন্ন বাধা মোকাবিলা করে মেয়েদের ক্ষমতায়ন, অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যম গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়াই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।

প্রকল্পের বিষয়ে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৩৪.৮৬% মেয়েরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় না এবং দারিদ্র্য, বৈষম্য, ও পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে এর প্রায় অর্ধেকই ঝরে পড়ে যা তাদের শিক্ষার পথচলায় বাধা সৃষ্টি করে। আমার বিশ্বাস প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হলে এটি মেয়েদের সঠিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে তাদের পূর্ণ সম্ভবনাই পৌঁছতে সাহায্য করবে।’

মালালা ফান্ড, বাংলাদেশের প্রতিনিধি মোশাররফ তানসেন বলেন, ‘মালালা ফান্ড মূলত কাজ করে প্রত্যেক শিশু ও নারীসহ সবাই যেনো গুনগত শিক্ষার আওতায় চলে আসে। সেই আলোকে মালালা ফান্ড ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ শুরু করেছে। আপনারা জানেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির দিক দিয়ে ৫ম স্থানে আছে। আমরা চাই আমাদের মেয়েদের জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে। আমাদের অদম্য কর্মসূচির এইটাই লক্ষ্য। এইজন্য আমরা চর, হাওর অঞ্চল বেছে নিয়েছি এই কর্মসূচির জন্য এবং জাগো ফাউন্ডেশন মিঠামইনে এই কাজটার জন্য দায়িত্ব পেয়েছে । এখন জাগো ফাউন্ডেশন ২টা স্কুলে কাজ শুরু করেছে তবে আমরা আশা করছি সামনে আরও ৯টা স্কুল এবং ২টা মাদ্রাসায় কাজ শুরু করবে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের মতো সংগঠন, যারা আমাদের হাওর এলাকায় এসে, শিক্ষা ক্ষেত্রে কাজ করছে – এমন দৃষ্টান্ত বিরল। জাগো ফাউন্ডেশন ও মালালা ফান্ড আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করছে, হাওর এলাকায় যারা ঝরে পড়ছে, তাদের নিয়ে কাজ করছে, এভাবে আমাদের শিক্ষার উন্নয়নে, ও জাতি গঠনে তারা ভূমিকা রাখছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একটি শিক্ষিত জাতি যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা গড়তে না পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কিন্তু উন্নত জাতিতে পরিণত হতে পারব না।’

এই প্রকল্পের একজন সুবিধাভোগী ঘাগড়া আঘাগড়া আঃ গণি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন এবং মালালা ফান্ডের এই ঙউঙগগঙ প্রকল্পটি নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। আমার মতে এটি আমাদের ছাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। এই প্রকল্পটি দারিদ্রতা, বিভেদের মতো সীমাবদ্ধতা ভেঙে দিয়ে একটি অনুক‚ল এবং সহায়ক শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আমি আশা করি। দারিদ্রতা, সামাজিক নিয়ম এবং বৈষম্যের মতো বাধা ভেঙে দিয়ে, এই প্রকল্পটি আমাদের দেশের মেয়েদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত করবে। আমাদের মেয়েরা হবে স্বাবলম্বী, পৌঁছাবে উচ্চতার নতুন শিখরে।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.