স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে উদ্যোক্তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে
ব্যবসায়ীদের শুধু ব্যবসা করলেই হবে না, কমপ্লায়েন্সও অনুসরণ করতে হবে। কল-কারখানায় দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সবার আগে তাদেরই দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (জুলাই ২০) রাজধানীর একটি হোটেলে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সামনের দিনের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হতে গেলে ব্যবসা-বাণিজ্যে কমপ্লায়েন্সকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমাদের অনেক উদ্যোক্তাই এ বিষয়টিকে এখনও সেভাবে গুরুত্ব দেয় না। আমি মনে করি, এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সচেতন করতে হবে।
সাধারণত কারখানা পরিদর্শনের বিষয়টি নিয়ে উদ্যোক্তাদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করে উল্লেখ করে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারখানা পরিদর্শনে গেলো মানেই এই নয় যে- কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বরং অবকাঠামোগত ঝুঁকি যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে মালিকপক্ষ তার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারে। আমরা চাই না কোনো কারখানা বন্ধ হয়ে যাক। ত্রুটিপূর্ণ কারখানাগুলোকে সহযোগিতা করতে চাই, অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগকে নিরাপদ করতে চাই।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (পদবী) মিনা মাসুদ উজ্জামান বলেন, আমরা কোনো কারখানাকে সাজা দিতে চাই না। তাদের সংশোধন করতে চাই। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি। সরকারি কর্মকর্তাদের মনোভাব পরিবর্তন হচ্ছে। সহযোগিতা নেওয়ার জন্য আপনাদেরও আন্তরিক হতে হবে। কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার পূর্বেই কারখানা মালিকদের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নেতৃত্বে চলমান সার্ভে কাম ইন্সপেকশন টিমে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে প্রথম ধাপে নির্বাচিত চারটি চেম্বার এবং ১২টি সেক্টোরাল অ্যাসোসিয়েশনে সেফটি সেল গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনের মনোনয়নের ভিত্তিতে অগ্নিনিরাপত্তা এবং সেফটি কমিটির দায়িত্ব বিষয়ে প্রশিক্ষক প্রস্তুত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর সহায়তায় গত এক বছরে প্রায় ১০০ কারখানার প্রায় ৩০০০ কর্মীকে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে এবং দুই শতাধিক কারখানার সেফটি কমিটির প্রায় ১২০০ সদস্যকে তাদের দায়িত্ব পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জিআইজেড-এর সহায়তায় এফবিসিসিআই নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার আওতায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রথম ধাপে ২৪০০।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিতি ছিলেন এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা আবু নাঈম মো. শহিদউল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাম্বাসেডর মাসয়ূদ মান্নানসহ ব্যবসায়ী নেতারা।