বাজারে শেয়ারসংখ্যা বাড়াতে রাইট ইস্যু করতে চায় বার্জার
নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে নতুন করে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে চায় তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিটি নতুন করে অধিকারমূলক বা রাইট শেয়ার ছেড়ে বাজারে তাদের শেয়ারের পরিমাণ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে কোম্পানিটি সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) চিঠি দিয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বার্জার পেইন্টসসহ তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানিকে নতুন করে বাজারে আরও শেয়ার ছাড়ার নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। বার্জার ছাড়া অন্য দুই কোম্পানি হলো ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ও সরকারি মালিকানাধীন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। বিএসইসির ওই নির্দেশনার আলোকে বাজারে শেয়ার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বার্জার। এ জন্য তারা আইনি ছাড়ও ছেড়েছে।
আইন অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি নতুন করে রাইট শেয়ার ইস্যু করলে বিদ্যমান সব শেয়ারহোল্ডার বা শেয়ারধারী সেই শেয়ারের মালিকানা পান। কিন্তু বার্জার পেইন্টস নতুন করে যে রাইট শেয়ার ইস্যুর আগ্রহ দেখিয়েছে তাতে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা অংশ নিতে চান না। কারণ, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরাও যদি এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন, তাহলে পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ১০ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়ার যে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেটি পূরণ হবে না। এ কারণে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের অংশকে বাদ দিয়েই বাজারে নতুন করে রাইট শেয়ার ছাড়তে চায় বার্জার। এ জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় চেয়েছে কোম্পানিটি।
বিএসইসিকে দেওয়া এ সংক্রান্ত চিঠিতে বার্জার জানায়, তারা নতুন করে যে রাইট শেয়ার ছাড়ার পরিকল্পনা করছে, তার মধ্যে ১৫ শতাংশ শেয়ার কোম্পানির কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে চায়। বাকি শেয়ার উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বাইরে সাধারণ শেয়ারধারীদের মধ্যে বিক্রি করা হবে। তবে কত দামে ও বিদ্যমান কয়টি শেয়ারের বিপরীতে কতটি রাইট শেয়ার তারা ইস্যু করতে চায়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি চিঠিতে।
চিঠির বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কোম্পানিটি যদি রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চায়, তাহলে বিদ্যমান আইন মেনে তা করতে হবে। বিদ্যমান আইনে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বাদ দিয়ে রাইট শেয়ার ইস্যু করার সুযোগ নেই। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় কমিশন চাইলে আইনি ছাড় দিতে পারে। কোম্পানিটি যদি এ ক্ষেত্রে ছাড় পায়, তাহলে সেই অনুযায়ী বাজারে নতুন করে রাইট শেয়ার ছাড়ার সুযোগ পাবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের আগস্টে পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ সংশোধন করা হয়। সংশোধিত বিধান অনুযায়ী, যেসব কোম্পানির আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) পরবর্তী পরিশোধিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকার বেশি, শেয়ারবাজারে সেসব কোম্পানির ন্যূনতম ১০ শতাংশ লেনদেনযোগ্য শেয়ার থাকতে হবে। পাবলিক ইস্যু রুলসের ওই সংশোধনীর পর আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনটি কোম্পানিকে বাজারে শেয়ারসংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেয় বিএসইসি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে শেয়ারবাজারে বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টসের লেনদেনযোগ্য শেয়ার রয়েছে ৫ শতাংশ। বাকি ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। তাই আইনি বাধ্যবাধকতা পালনে কোম্পানিটিকে নতুন করে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়তে হবে। ২০০৬ সালে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। গতকাল রোববার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১ হাজার ৮৫৫ টাকা।