বীমাখাতে ফিরছে মানুষের আস্থা- কর্মশালায় বক্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বীমাখাতে মানুষের আস্থার জায়গায় মানুষের সংকট চিল তা অনেক কেটে গেছে। সরকারের নীতি সহায়তার মাধ্যমে বীমাখাতের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে বীমার প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা বেড়েছে। তবে এখাতে এখনও দক্ষ জন বলের বেশ অভাব রয়েছে।
শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর) চতুর্থ প্রজম্মের জীবনবীমা কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সহযোগিতায় শনিবার রাজধানীর রামপুরায় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কার্যালয়ে বীমা খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সদস্যদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।
চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকতা এস এম জিয়াউল হক কর্মশালায় প্রধান বক্তা হিসেবে বলেন, নতুন নতুন প্রোডাক্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বীমার বাজার আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। চার্টার্ড লাইফ তার বাজার সম্প্রসারণে নতুন বেশ কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে। প্রতিনিয়তই সেসব প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ছে বলে জানান তিনি।
কর্মশালায় আগত সদস্যদের বীমা খাতের বিনিয়োগ, রিটার্ন এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এছাড়া উপস্থিত সদস্যদের বীমা বিষয়ক নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
তিন পর্বের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আইআরএফ সদস্যদের দিনের শুরুতে বীমা খাতের খুটিনাটি সম্পর্কে অবগত করেন এস এম জিয়াউল হক। এরপর কোম্পানিটির প্রধান ফাইন্যান্সিয়াল কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বীমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে।
শেষ পর্বে কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ চার্টার্ড লাইফের বেশি কিছু নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে আইআরএফ সদস্যদের অবগত করেন।
সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে মূখ্য নির্বাহী কর্মকতা এস এম জিয়াউল হক বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোকে যেখানে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কম সেখানে বিনিয়োগ করতে হয়। ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের প্রধান জায়গা হচ্ছে বন্ড। কিন্ত বন্ড থেকে যে আয় আসে সেটি খুবই অপার্যপ্ত। তাই ভালো রির্টানের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয়।
তিনি বলেন, চার্টার্ড লাইফের বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ রিটার্ন আসছে পুঁজিবাজার থেকে।
নতুন কোম্পানি হিসেবে আমাদের এখনও বড় ধরনের কোনো বীমাদাবি পরিশোধ করতে হয়নি। তবে ২০২৫ সালের পর আমাদের বেশিরভাগ পলিসির মেয়াদ শেষ হবে। তখন আমাদের দাবি পরিশোধে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন “আমরা সেটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছি, যাতে চার্টার্ড লাইফ যে কোনো সময় স্বাচ্ছন্দে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারে”।
আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হক এর সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমনসঞ্চালনায় কর্মমালায় কর্মশালায় আইআরএফ’র ২৬ জন সদস্যের উপস্থিতি ছিলেন।
অর্থনীতিতে বীমার অবদান বিষয়ে আরেক এক প্রশ্নের জবাবে চার্টার্ড লাইফের সিইও বলেন, আমাদের দেশে বীমার অবদান মাত্র ৫ শতাংশ। এই হার বাড়াতে হলে উন্নত দেশের ন্যায় ব্যাংকাসুরেন্সসহ আরো সাত আটটি চ্যানেলে পলিসি বিক্রি করতে হবে।
নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য একমাত্র ইন্স্যুরেন্সই উপযুক্ত মাধ্যম। সার্বজনীন পেনশন বীমা প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে হলে এর সুফল বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।
কোম্পানিটির প্রধান ফাইন্যান্সিয়াল কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে বীমা। তবে সে ক্ষেত্রে সকল কোম্পানিতে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকা জরুরি।
বীমার পলিসি থাকলে কর সুবিধা পাওয়া যায় এই তথ্যই অনেক নাগরিক জানেন না। বীমার সুবিধাগুলো সকল নাগরিকের কাছে পৌছি দিলে সবাই আগ্রহ পাবে বলে মনে করেন তিনি।
কোম্পানিটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ বলেন, বীমা দাবি পরিশোধের হার ৭০ শতাংশের বেশি। মাত্র দুই তিনটা কোম্পানির কাছে মার্কেটের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। যারা ভালো করছে তাদের বিষয়ে গণমাধ্যম ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে বীমা খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যক্তিগত জীবন বীমা পলিসি এবং গ্রুপ জীবন বীমা পলিসি বিক্রি করে। বর্তমানে, কোম্পানিটি সারাদেশে ৩৫টি সেলস অফিস, ২৪টি শাখা অফিস এবং ১৫টি ইউনিট অফিসের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত কোম্পানিটির মোট সম্পদের পরিমাণ ৯৪ কোটি টাকা এবং লাইফ ফান্ডের আকার ৪৯ কোটি টাকা।
২০২২ সালে চার্টার্ড লাইফ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এটির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৭.৫০ কোটি টাকা।