আজ: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

লিবিয়ায় ঝড়-বন্যায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যুর শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডবে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ের আঘাতে দেশটির উপকূলীয় শহরগুলোর শতশত বাড়ি উড়ে গেছে। এছাড়া দুটি পুরোনো বাঁধ ভেঙে গিয়ে দারনা শহরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। আর এই বন্যায় দারনা শহর পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

পূর্ব লিবিয়ার স্বঘোষিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ জানিয়েছেন, তাদের আশঙ্কা বন্যা ও ঝড়ে অন্তত ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া এখনো নিখোঁজ আছেন হাজার হাজার মানুষ। তবে তিনি পরিষ্কারভাবে জানাননি ২ হাজার মানুষ নিহত ওয়ার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করেছেন তারা।

লিবিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলের মুখপাত্র আহমেদ এল-মোসমারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, শুধুমাত্র দারনাতেই মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, সেখানে ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ নিখোঁজ আছেন। মূলত সেখানে পুরোনো দুটি বাঁধ ভেঙে গিয়ে এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

লিবিয়ার বেনগাজি থেকে দাতব্য সংস্থা রেড ক্রিসেন্টের আঞ্চলিক প্রধান কাঈস ফাখেরি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের কারণে দারনায় ১৫০ জন মানুষ নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। সেখানে পানি ১০ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আল জাজিরার সাংবাদিক মালিক ত্রাইনা লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে বলেছেন, ‘দারনা শহরটি পুরোপুরি পাহাড় ঘেরা, আর সেখানে এই বাঁধগুলো ধসে পড়েছে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, শহরটিতে ৩০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি গড়িয়ে গেছে। আর আমরা দেখছি পুরো শহর ধ্বংস হয়ে গেছে।’

ওই শহরের বাসিন্দাদের ধারণ করা ভিডিও থেকে দেখা গেছে, সেখানকার অবস্থা বেশ ভয়াবহ। অনেক জায়গায় মানুষের বসতি পুরোপুরি নিশ্চহ্ন হয়ে গেছে। এছাড়া উঁচু উঁচু ভবনের চারপাশে কাঁদা পানি জমে আছে।

লিবিয়া-যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হানি সেনিব আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে গেছে, বিদ্যুৎ নেই। দারনায় যে ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে, প্রতি মিনিটে সেটি বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়বে… কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ।’

এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ গাদ্দাফিকে হত্যা করার পর অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে লিবিয়া। বর্তমানে দেশটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। একটি পক্ষ পূর্ব দিকের; আরেকটি পক্ষ পশ্চিম দিকের অঞ্চলগুলো শাসন করছে। আর বিভক্তির কারণে বিপর্যস্ত অঞ্চলগুলোতে উদ্ধার অভিযান অনেক কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে এরমধ্যে ত্রিপোলিভিত্তিক প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল দেশটির তিনটি অংশকে দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এ কাউন্সিল আন্তর্জাতিক সহায়তা ও অন্যান্য দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.