আজ: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার |

kidarkar

বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ রেখেই সাইবার বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার, সর্বোচ্চ শাস্তি কোটি টাকা জরিমানা ও ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘সাইবার নিরাপত্তা বিল’ ২০২৩ পাস হয়েছে।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিলটি পাসের জন্য প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে জনমত যাচাইয়ের জন্য দেওয়া প্রস্তাবের আলোচনায় বিরোধীদলের সদস্যরা বিলটির বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি তোলেন ও বিরোধিতা করেন। বিশেষ করে পরোয়ানা ছাড়া সাংবাদিকদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে তারা বিরোধিতা ও আপত্তি জানান। তবে বিরোধীদলের সদস্যদের জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায় এবং বিলটি পাস করা হয়। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে এ বিলটি পাস করা হয়।

বিলের ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধ ও দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা এবং জনগণ বা উহার কোনো অংশের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করিবার অভিপ্রায়ে কোনো কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা বে-আইনি প্রবেশ করেন বা করান; কোনো ডিজিটাল ডিভাইসে এইরূপ দূষণ সৃষ্টি করেন বা ম্যালওয়্যার প্রবেশ করান যাহার ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে বা গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হন বা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় বা জনসাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও সেবা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসসাধন করেন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, সংরক্ষিত কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ বা অনুপ্রবেশ করেন বা এইরূপ কোনো সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ করেন, যাহা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্রের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনো কাজে ব্যবহৃত হইতে পারে অথবা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্র বা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সুবিধার্থে ব্যবহার করা হইতে পারে, তাইলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে সাইবার সন্ত্রাস অপরাধ। যদি কোনো ব্যক্তি এ অপরাধ সংঘটন করেন, তাইলে তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে এইরূপ কোনো তথ্য প্রকাশ, সম্প্রচার, ইত্যাদি যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জাতভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করিবার বা উসকানি দেওয়ার অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এইরূপ কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যাহা ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাইলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হবে অপরাধ। যদি কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ সংঘটন করেন, তাইলে তিনি অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাইলে এটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১৪ (চৌদ্দ) বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলের ৪২ ধারায় পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলা আছে— যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো স্থানে এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা হইতেছে বা হইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে বা সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছিয়া ফেলা, পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হইবার বা করিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাইলে তিনি অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, ওই স্থানে প্রবেশ করিয়া তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। ওই স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ; ওই স্থানে উপস্থিত যেকোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ করিয়াছেন বা করিতেছেন বলিয়া সন্দেহ হলে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং এর অধীন তল্লাশি সম্পন্ন করিবার পর পুলিশ অফিসার তল্লাশি পরিচালনার রিপোর্ট ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করিবেন।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.