পেঁয়াজ-রসুনের দাম বেশি, সাধারণ মানুষ ভালো নেই: কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড.মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পেঁয়াজ-রসুনের দাম বেশি, সাধারণ মানুষ ভালো নেই। প্রতিদিনই আমরা খবর দেখছি পেঁয়াজের দাম বেশি, রসুনের দাম বেশি। বিশেষ করে কম আয়ের মানুষ যারা রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা- তাদের এই পেঁয়াজ, রসুন কিনতে গিয়ে অনেক খরচ করতে হচ্ছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ‘কৃষি বিপ্লব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব’ শীর্ষক সমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইডিইবি এবং বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করা যে কত বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য এটা বলার ভাষা জানা নেই। তারপরও আমরা কিন্তু ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াচ্ছি। গতকালও আমি কয়েকজন মিলারের সঙ্গে কথা বলছিলাম ৷ মিলাররা খুব খারাপ অবস্থায় আছেন, কারণ তারা চাল কিনেছিলেন, ধান কিনেছিলেন, মনে করেছিলেন অনেক বেশি লাভবান হবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত দাম আরও কমের দিকে। এখন সব মিলার সরকারকে চাল দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বাজারে চালের দাম সরকার ঘোষিত দামের চেয়ে আরও কম। আবার অনেক বছর এমন হয়, আমি নিজেও খাদ্যমন্ত্রী ছিলাম, মিলাররা আমাদের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেন না। তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়, বিদ্যুৎসংযোগ কেটে দেওয়া হয়। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়োজিত করা হয়। এরপরও তারা চাল দেন না, কারণ বাজারে দাম বেশি থাকে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই প্রতিকূল পরিবেশ কীভাবে মোকাীবলা করা যাবে, এটিই এখন চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তার জন্য বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করতে হবে যে, কোন ফসল বাংলাদেশে ফলানো সম্ভব। সার্বিক উন্নয়নে আমরা একটি বিপ্লব শুরু করবো। কৃষিকে গুরুত্ব দেওয়ার ফলে খাদ্য ব্যবস্থাপনায় দেশ খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে।
এসময় বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় শক্তিশালী বিরোধীদল চাই। আন্দোলন সংগ্রাম করে সরকারকে হটাতে পারবেন না। গত ১৪ বছরে পারেননি, এক-দেড় মাসেও পারবেন না। জনগণ যে রায় দেবে আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত। তাই বলছি আপনারা নির্বাচনে আসুন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের লড়াই করার মন দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু মনে মনে ভেবেছেন খাদ্য নিরাপত্তার হুমকির কথা। আমাদের ৭৮ থেকে ৮০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কৃষকের সন্তান। তারাই আজ বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কৃষকরা আজ বদলে গেছেন, নতুন নতুন পদ্ধতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন। কৃষিকে এগিয়ে নিতে যত সহায়তা দরকার সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে। ২০৪১ সালে যে উন্নত দেশ হবে সেই স্বপ্ন পূরণে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সবার ঘরে ঘরে কৃষি প্রযুক্তি ছড়িয়ে গেছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপ করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। এছাড়া ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিষয়ক প্রকল্প পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি এবং ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়ার্টার ম্যানেজমেন্টের পরিচালক খন্দকার মুহাম্মদ রাশেদ ইফতেখার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।