মুনাফায় রেকর্ড, ভাল লভ্যাংশ, তবু দরপতন, ইউনিক
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও ভাল ব্যবসা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর সর্বশেষ অর্থবছরে (২০২৩) কোম্পানিটি রেকর্ড মুনাফা করেছে। ঘোষণা করেছে চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ।
ভাল মুনাফা আর আকষর্ণীয় লভ্যাংশের ইতিবাচক কোনো প্রতিফলন ঘটেনি কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনে। বরং বাজার আচরণ ছিল পুরো বিপরীত। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লভ্যাংশ ঘোষণার পরবর্তী কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩.৩৭% দর হারিয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। বিষয়টি বাজারের অসুস্থতার দিকে ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গতকাল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ২০২২-২৩ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে ইউনিক হোটেলের পরিচালনা পর্ষদ। কোম্পানিটি আলোচিত বছরে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) করেছে ৬ টাকা ৪৭ পয়সা। স্টক এক্সচেঞ্জে ২০১২ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এটিই কোম্পানিটির সর্বোচ্চ ইপিএস। আগের বছর এর ইপিএস হয়েছিল ৩ টাকা ২৭ পয়সা। তার আগের বছর কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৩৩ পয়সা লোকসান দিয়েছিল। আর তার আগের তিন বছর ইপিএস ছিল যথাক্রমে ৯৫ পয়সা, ২ টাকা ৯ পয়সা ও ২ টাকা ১ পয়সা।
গতকাল কোম্পানিটি সর্বশেষ বছরের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। গত ৪ বছরের মধ্যে এটি এই কোম্পানির সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। আগের বছর কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তার আগের ২ বছর লভ্যাংশ দিয়েছিল ১০ শতাংশ হারে।
আজ লভ্যাংশ ঘোষণার পরবর্তী দিনে ডিএসইতে ইউনিক হোটেলের শেয়ারের দাম ২ টাকা ৪০ পয়সা কমে ৭১ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৬৮ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৭৮৯টি শেয়ার কেনাবেচা হয়, যার মূল্য ছিল ৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
সর্বশেষ বছরের ইপিএসের ভিত্তিতে ইউনিট হোটেলের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৫২।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে এক ধরনের কারসাজি চলছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এর ফলে বাজারে দূর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানি, এমনকি বছরের পর বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। আর ভাল ট্র্যাকরেকর্ডসম্পন্ন কোম্পানিগুলোর শেয়ার পড়ে আছে ফ্লোরপ্রাইসে। এই প্রবণতাকে অসুস্থ মনে করেন বিশ্লেষকরা। ইউনিক হোটেলের শেয়ারে লভ্যাংশ পরবর্তী বাজার আচরণ এই অসুস্থতারই প্রতিফলন বলে মনে করেন তারা।