বিকল্প উৎপাদন লাইন চালু করেছে মেট্রো স্পিনিং
নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড নতুন ভবন নির্মাণ ও নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ কারখানার আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য এর উৎপাদন আগামী এক বছর বন্ধ থাকবে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, কারখানাটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো। এতে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এজন্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য কারখানা ভবন তৈরির পাশাপাশি নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। নতুন কারখানা চালু হলে এর উৎপাদন ক্ষমতা ১১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে কোম্পানির টার্নওভার ও মুনাফা অনেক বাড়বে।
কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, মেট্রো স্পিনিংয়ের কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও ক্রেতা ধরে রাখার জন্য বিকল্প উৎপাদন ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটির আরেক সহযোগি প্রতিষ্ঠান ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের নতুন একটি বিকল্প লাইন মেট্রো স্পিনিংয়ের জন্য চালু করা হয়েছে।
মেট্রো স্পিনিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বস্ত্রকল সমিতি-বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘৩০ বছরের পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কোনোভাবেই কারখানাটির উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছিল না। আবার সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে কারখানাটির আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তাও দেখা দিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ না রেখে তা অন্যত্র স্থাপনেরও চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গ্যাসলাইন স্থানান্তরের অনুমতি মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
কোম্পানির চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে মেট্রো স্পিনিংয়ে দৈনিক সুতা উৎপাদন ক্ষমতা ৬ টনে নেমে এসেছে। নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর দৈনিক সুতা উৎপাদন ক্ষমতা ২২ টন থেকে ২৫ টনে দাঁড়াবে। ’
মেট্রো স্পিনিংয়ের কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও ক্রেতা ধরে রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের একটি নতুন উৎপান লাইন মেট্রো স্পিনিংয়ের জন্য চালু করা হয়েছে।
কোম্পানিটির কারখানা আধুনিকায়নের জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। যার ৬০ শতাংশ ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে এবং বাকি ৪০ শতাংশ কোম্পানির নিজস্ব উৎস থেকে যোগান দেওয়া হবে। তুলার সুতা ছাড়াও মানবসৃষ্ট ফাইবার সুতাসহ সব ধরনের সুতা উৎপাদনের জন্য প্রকল্পটি তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানি সচিব।
সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৯৮ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৫ পয়সা।
আগের বছর ২০২২ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছেল। ওই বছর কোম্পানির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৩৮ পয়সা।
২০০২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মেট্রো স্পিনিংয়ের মূলধন ৬১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৫টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩০.০৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১১.৬৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৮.২৮ শতাংশ শেয়ার।
সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ি, কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত-পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ১৩.৮৮ পয়েন্টে।