একদিনের ব্যবধানে ফের বাড়লো ঋণের সুদহার
নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র একদিনের ব্যবধানে আবারও ঋণের সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। মূল্যস্ফীতি সামাল দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তে সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট বা স্মার্ট (SMART) এর সঙ্গে মার্জিন বাড়িয়ে সাড়ে ৩ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহারও নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্মার্ট এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের বদলে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা হয়েছে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি পর্যায়ক্রমে হ্রাস করার লক্ষ্যে ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্ট এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশের স্থলে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্ট এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের স্থলে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ হবে। তবে কৃষি ও পল্লি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মার্জিন ২ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।
মাত্র একদিন আগে (বুধবার) নীতি সুদহার বা রেপো রেট একবারে দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন নীতি সুদহার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ফলে নতুন নীতি সুদহার বা রেপো রেট হবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করে, তার সুদহার বাড়বে। এতে ব্যাংকগুলোতে রাখা আমানত ও ব্যাংকঋণের সুদহারও বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিলো।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এতদিন মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করে আসছিল। সেটি থেকে বেরিয়ে এসে এখন সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে। সাধারণত সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হন।
গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। মাসটিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমেছে, যা তার আগের মাস আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে সেপ্টেম্বরে গ্রাম-শহরনির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো ১২ শতাংশের ওপরেই ছিল। আর গত আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে ওঠে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত মঙ্গলবার মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে। যা তার আগের মাস আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে সেপ্টেম্বর মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা আগের মাস আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।