আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

পিকে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (০৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মীর আহমেদ আলী সালাম। তবে পিকে হালদার পলাতক থাকায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর এই মামলায় দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ওইদিন আদালত রায়ের জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

গত ২০ জুলাই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। চার্জশিট ভুক্ত ১০৬ জন সাক্ষী থাকলেও দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোট ১১৪ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। এরপর গত ২৬ জুলাই কারাগারে থাকা চার আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। তবে পিকে হালদারসহ বাকিরা পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেননি। এরপর মামলাটিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ধার্য করা হয়।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পিকে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন, যা দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ উৎস, প্রকৃতি, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ, উৎস গোপন বা আড়াল করতে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ করেছেন।

এরপর ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। চার্জশিটে তার বিরুদ্ধে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া তিনি কানাডায় এক কোটি ১৭ লাখ কানাডিয়ান ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা) পাচার করেছেন বলে তথ্য দেওয়া হয়। তদন্তকালে তার বিরুদ্ধে ছয় হাজার কোটি ৮০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পায় দুদক।

পিকে হালদার ২০০৮ সালে আইআইডিএফসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন। ২০১৯ সালের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সময় আলোচনায় আসেন তিনি।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান- পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, এফএএস ফাইন্যান্স এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারি করা হয়। তবে তার কয়েক ঘণ্টা আগে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত হয়ে দেশ ছাড়েন তিনি। এরপর গত বছর ১৪ মে কলকাতায় গ্রেপ্তার হন তিনি। এখন তিনি সেখানেই বন্দি আছেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.