আজ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য রেমিট্যান্সের গতি কমছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার সংকট চলছে অনেক দিন। সংকট উত্তরণে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। বরং দিন যত যাচ্ছে ডলারের সংকট তত তীব্র হচ্ছে। এ সুযোগে অসাধু চক্র ডলার বাণিজ্যে মেতেছে। খোলাবাজারে ইচ্ছেমতো হাঁকানো হচ্ছে ডলারের দাম।

সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার সবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে টান পড়েছে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভে। রিজার্ভ কমে এখন ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। যদিও বিশ্লেষকদের ধারণা, খরচ করার মতো রিজার্ভ আরও কম। এরই মধ্যে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স লেগেছে বড় ধাক্কা। গত সেপ্টেম্বরে ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছিল।

চলতি অক্টোবর মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহ আশানুরূপ নয়। অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৮ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রার (এক ডলার সমান ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) যা আট হাজার ৫৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে গড়ে দৈনিক আসছে ৬ কোটি মার্কিন ডলার বা ৬৫৫ কোটির টাকার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে ৭৮ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। রেমিট্যান্স আসার এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে ১৮৬ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসবে।

আলোচিত সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে একটির মাধ্যমে ২ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।

এসময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক। বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।

গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক টাকা সমান ১০৯.৫০ টাকা ধরে) যা ১৪ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। এটি গত ৪১ মাসের মধ্যে ছিল মাসিক সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স। ২০১৯ সালের মে মাসে ১২৭ কোটি ৬২ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।

অন্যদিকে ডলার সংকটের মাঝে রেমিট্যান্সের নিম্নমুখী ধারাকে ভালো চোখে দেখছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, গত দুই বছরে কাজের জন্য দেশের বাইরে গিয়েছেন ২০ লাখ কর্মী। দেশের বাইরে প্রবাসী বাড়ছে, অথচ দিন দিন রেমিট্যান্স কমছে। এর কারণ খুঁজে সমাধানের দাবি তাদের।

গত জুলাই মাসে দেশে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের প্রবাসী আয়। এরও আগে গত জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স এসেছিল। রেমিট্যান্স প্রবাহের একক মাস হিসেবে যা ছিল প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছিল।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন দুই হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। যা এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.