আজ: রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ইং, ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ মে ২০২৪, রবিবার |

kidarkar

বুরাক ঔজচিভিত-এর সাথে রূপান্তর যাত্রা শুরু করলো সিঙ্গার বেকো

নিজস্ব প্রতিবেদক: তুরস্কের কচ গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠান আৰ্চেলিকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ট্রান্সফরমেশন জার্নি উইথ বুরাক ঔজচিভিত’ শীর্ষক পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব এমএইচএম ফাইরোজ, আৰ্চেলিকের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল মার্কেটিং, বিজনেস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথের পরিচালক মিস হানদান আবদুররাহমানোগলু এবং সিঙ্গার বাংলাদেশের এই রূপান্তর যাত্রার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর জনপ্রিয় তুর্কি অভিনেতা জনাব বুরাক ঔজচিভিত।

এ বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের নতুন লক্ষ্যের সাথে মিল রেখে একটি অত্যাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট, নতুন কনসেপ্ট স্টোর ও ওয়ার্কস্পেস

সহ বেশকিছু রূপান্তরের ঘোষণা দেয় সিঙ্গার বাংলাদেশ। এই রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশে কচ গ্রুপ ও আর্চেলিকের বৈশ্বিক দক্ষতা ও

মান নিয়ে আসা হয়েছে; যা ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করবে এবং এই পদক্ষেপ সিঙ্গার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতিকেই

পুনর্ব্যক্ত করে। রূপান্তরের এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া শুরু করার পর বুরাক ঔজচিভিত বেশকিছু ক্রিয়েটিভ কমিউনিকেশনে অংশ নিয়ে এই

যাত্রার সহযোগী হন। বুরাক বিভিন্ন ধারাবাহিক নাটকে নিজের অসামান্য অভিনয় প্রতিভা দেখানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে

ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

রূপান্তরের এই প্রচেষ্টার বিষয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এমএইচএম ফাইরোজ বলেন, “আমাদের কার্যক্রমের মূল স্তম্ভ হিসেবে গ্রাহক-কেন্দ্রিকতাকে রেখে, বাংলাদেশের ক্রেতাদের জন্য সমসাময়িক ও বৈশ্বিক মানদণ্ড নিশ্চিত করতে সিঙ্গার বাংলাদেশ-এর কার্যক্রমে পরিবর্তন নিয়ে আসছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও এই খাতে অবদান রাখার জন্য বৈশ্বিক দক্ষতা ও মান নিয়ে আসার মাধ্যমে দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড হওয়াই সিঙ্গার বাংলাদেশের লক্ষ্য।”

জনাব ফাইরোজ আরও বলেন, “বাংলাদেশে জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে বুরাক ঔজচিভিত অন্যতম। তিনি গত কয়েকদিন ধরে আমাদের অতিথি হিসেবে ছিলেন এবং তাকে আপ্যায়ন করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুরস্কের সাথে আমাদের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং তুর্কি মান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে আমরা আমাদের রূপান্তর যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের এই সফল রূপান্তর যাত্রার গল্প আমরা ক্রেতাদের সাথেও ভাগাভাগি করে নিতে চাই। আর আমাদের বিশ্বাস, আমাদের ক্রেতাদের কাছে এই গল্পটি তুলে ধরার জন্য বুরাক ঔজচিভিত-ই সবচেয়ে উপযুক্ত।”

এ বিষয়ে আর্চেলিকের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল মার্কেটিং, বিজনেস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথের পরিচালক হানদান আবদুররাহমানোগলু বলেন, “সিঙ্গার বাংলাদেশ অধিগ্রহণের পর থেকে স্থানীয় বাজারে বৈশ্বিক দক্ষতা ও মান নিয়ে আসার চেষ্টা করছে আর্চেলিক। এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে ও কনজ্যুমার ডিউরেবলস খাতকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে আমরা তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে সেরা অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। উৎপাদন, রিটেইল অভিজ্ঞতা ও কর্মীবান্ধব কর্মস্থল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের বৈশ্বিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশের সবধরনের কার্যক্রমকে উন্নত করতে প্রয়োজনীয় রূপান্তর নিয়ে আসছি আমরা। আমরা উদ্ভাবন, গ্রাহক সন্তুষ্টি ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা প্রযুক্তি, রিটেইল স্টোর ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিঙ্গার বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবো। সিঙ্গার বাংলাদেশের এই যাত্রায় বুরাক ঔজচিভিতকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে পেয়ে আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত।”

গুলশান ১-এ দেশের প্রথম কনসেপ্ট স্টোর চালু করেছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত আৰ্চেলিকের পুরস্কার বিজয়ী কনস্টেপ্ট স্টোরের ডিজাইনের আদলে চালু করা এই স্টোরে সিঙ্গার ও বেকো’র (ইউরোপের শীর্ষ ৩ ব্র্যান্ডের একটি) বিস্তৃত পণ্যের সমাহার প্রদর্শনের জন্য কিউরেটেড এক্সপেরিয়েন্স জোন রয়েছে। এই স্টোর থেকে ক্রেতারা পণ্যটি কেনার আগেই যাচাই করে দেখতে পারবেন, যা কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় যোগ করবে নতুন মাত্রা। এতে প্রথমবারের মতো আৰ্চেলিকের বৈশ্বিক ব্র্যান্ড বেকো’র সাথে শপ-ইন-শপ পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে। সিঙ্গারের নতুন এই স্টোরের ধারণা রিটেইল অভিজ্ঞতায় বৈচিত্র্য নিয়ে আসবে। গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ ও পণ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মান নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রিটেইল খাতে নতুন মানদণ্ড নিশ্চিত করছে সিঙ্গার। দেশের প্রধান শহরগুলোতে এ ধরনের আরও সিঙ্গার বেকো কনসেপ্ট স্টোর চালু করা হবে এবং এ বছর দেশজুড়ে রিটেইল স্টোরগুলোয় একইরকম ডিজাইন নিশ্চিত করা হবে।

সিঙ্গার বাংলাদেশ রাজধানীর গুলশান ২-এ করপোরেট হেডকোয়ার্টার স্থানান্তর করেছে। তুর্কি স্থপতিদের ডিজাইন করা নতুন এই অফিসে কর্মীদের জন্য ওপেন ওয়ার্কস্টেশন, কোলাবোরেশন জোন, টাউন হল এরিয়া, প্রোডাক্ট শোরুম, লাঞ্চরুম, প্রেয়ার রুম (নামাজ ঘর) ও সোশ্যালাইজিং এরিয়া সহ বিশ্বমানের কর্মস্থলের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি কাজ, দলগত দক্ষতা, সহযোগিতা, সৃজনশীলতা বা অগ্রসর চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে কর্মীদের উৎসাহী করে তুলবে। এই হেডকোয়ার্টার সিঙ্গার বাংলাদেশের প্রগতিশীল মনোভাবকে প্রতিফলিত করে, যা এই প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক সফলতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।

সিঙ্গার বাংলাদেশের নতুন ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে উৎপাদন শুরু হয়েছে। আর্চেলিক-এর ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত নতুন কারখানাটি ৪০০০ এরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং স্থানীয় উৎপাদনে কোম্পানির প্রতিশ্রুতিকেও ছাড়িয়ে যাবে। সিঙ্গার বাংলাদেশ-এর লক্ষ্য হল ৯০% এর বেশি পণ্য দেশেই উৎপাদন করা, আমদানির উপর নির্ভরতা হ্রাস করা এবং একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরবরাহকারী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় টেকসই হওয়ার জন্য সিঙ্গার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টটি লিড গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে।

সিঙ্গার বাংলাদেশ সম্পর্কে

সিঙ্গার বাংলাদেশ-এর অন্যতম বৃহৎ কনজ্যুমার ডিউরেবল পণ্যের খুচরা বিক্রেতা, যার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ৪৬৩টি খুচরা পণ্য বিপণন কেন্দ্র ও ১০০০ এরও বেশি ডিলারশিপ রয়েছে। সিঙ্গার ১৯০৫ সালে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে কোম্পানিটি সিঙ্গার ও বেকো-সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কনজ্যুমার ডিউরেবল পণ্য বিপণন করছে। কোম্পানি’টির ৫৭ শতাংশ শেয়ার আর্চেলিক-এর মালিকানাধীন এবং বাকি শেয়ার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশ্যে লেনদেন করা হয়।

আর্চিলিক সম্পর্কে

বিশ্বব্যাপী ৫৫ হাজারের বেশি কর্মীসহ, আর্চেলিক-এর বৈশ্বিক কার্যক্রমে রয়েছে ৫৭টি দেশে সহায়ক প্রতিষ্ঠান, ১৩টি দেশে ৪৫টি উৎপাদন সুবিধা রয়েছে (যেমন: তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, ইতালি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং চীন) এবং ২২টি ব্র্যান্ডের পূর্ণ মালিকানা বা সীমিত লাইসেন্সের মাধ্যমে ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে (আর্চেলিক, বেকো, ওয়ার্লপুল, গ্রুন্ডিগ, হটপয়েন্ট, আর্কটিক, এরিস্টন, লাইজার, ইন্ডেসিট, ব্লুমবার্গ, ডিফাই, ডলেন্স, হিটাচি, ভোলটাস বেকো, সিঙ্গার, ইলেক্ট্রা ব্রেগেঞ্জ, ফ্লাভেল, বকনেকত, পৃভিলেজ, এলটাস, ইগনিস, পোলার)। আর্চেলিক তার বাজারের অংশীদারিত্বের (ভলিউমের উপর ভিত্তি করে) ইউরোপের বৃহত্তম হোয়াইট গুডস কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে এবং ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির টার্নওভার ছিল প্রায় ৮ বিলিয়ন ইউরো। বিশ্ব জুড়ে আর্চিলিকের ৩১টি গবেষণা ও ডিজাইন কেন্দ্র ও রয়েছে ২৩০০ এর বেশি গবেষক। এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক নিবন্ধিত পেটেন্ট আবেদন রয়েছে। টানা পঞ্চমবারের মতো আর্চেলিক ডিএইচপি হাউসহোল্ড ডিউরেবলস শিল্পে (২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর ঘোঘিত) সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করেছে। আর্চিলিকের ভিশন হল ‘বিশ্বকে সম্মান করা, বিশ্বব্যাপী সম্মান করা।’ *লাইসেন্সধারী নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.