আজ: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ অগাস্ট ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

পুঁজিবাজার নতুন রেকর্ড, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় দেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘবছর যাবত নাজুক অবস্থা।গত আড়াই বছরে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের চোখেমুখে ছিল কেবল আতঙ্কের ছাপ। কিছু কারসাজিকারী ছাড়া পুঁজিবাজারে লাভবান হয়েছেন, এমন বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া খুবই দুস্কর হবে। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে এখন পুঁজিবাজার ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে বিনিয়োগকারীদের জন্য।

মূলত স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের পুঁজিবাজার বুল গতি ফিরে পেয়েছে। যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে গত তিন দিনের পুঁজিবাজারে লেনদেন ও মূল্য সূচক বাড়ার মাধ্যমেই। তিন দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ৬৯৩ পয়েন্ট। এর আগে টানা তিন দিনের উত্থানে ডিএসই সূচকের এমন উত্থান হয়নি। এটি পুঁজিবাজার ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ড. ইউনূসের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর আকুন্ঠ আস্থার কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমন আস্থার ভিত তৈরি হয়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বিনিয়োগকারীরা ও বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত আড়াই বছরে লাগামহীন পতনে দেশের শেয়ারবাজার তলালিতে নেমে গিয়েছিল। দীর্ঘদিনের ঘুনে ধরা শেয়ারবাজার এখন বিশাল শক্তিমত্তা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তাঁরা আশা করছেন, ড. ইউনূসের ছোঁয়ায় দেশের শেয়ারবাজার নতুন উচ্চতার দিকে অগ্রসর হবে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৭ হাজার ১০৫ পয়েন্ট। এরপর থেকেই চলেছে থেমে থেমে পতনের ছোবল। পতনের ছোবলে ২ বছর ৭ মাসে ডিএসইর সূচক কমেছে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট। অথচ এরমধ্যে শেয়ারবাজারে নতুন আইপিও শেয়ার এসেছে ২০টির বেশি। যেগুলোর মূলধন সূচকে যোগ হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সময়ে বাজারে তারল্য সংকটের কারণে যতটা কমেছে, তারচেয়ে বেশি কমেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত ইসলামের সহযোগিতায় আওয়ামী পন্থীদের লুটপাটে শেয়ারবাজারের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে অবিলম্বে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশন সদস্যদের পূর্নগঠনের দাবি করেছেন তারা।

বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর।

দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬৬ টির, দর কমেছে ১১৪ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬ টির। ডিএসইতে ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮৩০ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৬১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৮৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪৪ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩১ টির এবং ১০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.