আজ: বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ অগাস্ট ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

মাসরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান না হতে দেওয়ার ষড়যন্ত্র

শেয়ারবাজার ডেস্ক : গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মাধ্যমে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করে। আর শেখ হাসিনা সরকারের পতনে তারই দোসর শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান পদ দখল করে থাকা শিবলী রুবায়েতের পতন হয়। এরপর বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ শূন্য হয়ে যায়। গতকাল নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় মাসরুর রিয়াজকে । এরপর শুরু হয় নানা বিতর্ক।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়োগ দেওয়া নতুন এই চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুরকে নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে তার নিয়োগ বাতিলের দাবি তুলেছেন। তবে সরকারের নিয়োগ দেওয়া কোনো ব্যক্তিকে সেই প্রতিষ্টানের কোনো ব্যক্তি নিয়োগ বাতিল চাওয়া সরকারী আইন লঙ্ঘন।

গুঞ্জন উঠেছে এই বির্তকের পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে। একযুগের বেশি সময় ধরে নানা অনিয়মের অনিয়ম করার পরেও বিএসইসির কোনো কর্মকতার প্রতিবাদি হয়ে উঠতে দেখা যায়নি। কিন্তু হঠাৎ করে গত দুই-একদিন ধরে প্রতিবাদি হয়ে উঠেছে । গুঞ্জন উঠেছে এই দাবির পেছনে বিএসইসির একজন সিনিয়র নির্বাহি পরিচালকের (ইডি) কমিশনার হওয়া এবং একজন কমিশনারের চেয়ারম্যান হওয়ার ব্যর্থতার ষড়যন্ত্র রয়েছে ।

গতকাল বিএসইসির অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ব নির্ধারিত সভায় মাসরুর রিয়াজকে চেয়ারম্যান হিসেবে চান না কিনা এমন প্রস্তাবে উপস্থিত প্রায় সবাই হাত তুলে অসম্মতি জানিয়েছেন।বিএসইসির ওইসভা শুরুর আগে উপসচিব ফরিদা ইয়াসমিন সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে মাসরুর রিয়াজকে ৪ বছরের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো, সাইফুর রহমান। এতে নির্বাহি পরিচালক মাহবুবের রহমান চৌধুরী, কামরুল আনাম খান, রেজাউল করিমসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির পরিচালক, উপ-পরিচালক ও সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

মাসরুর রিয়াজের বিষয়ে সভায় বলা হয়, মাসরুর রিয়াজ শেয়ারবাজারের লুটেরা এবং সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠ ও বিগত কমিশনের সঙ্গে সর্ম্পক্য রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এতে বলা হয়, মাসরুর রিয়াজ সালমান এফ রহমানের সঙ্গে মিলে অনেক কাজ করেছেন। এছাড়া বিগত কমিশনের সঙ্গে রোড শোতে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে বিএসইসির কর্মকর্তারা একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান চায়। যা মাসরুর রিয়াজ না। যাকে কমিশনে যোগদানকে কর্মচারীরা স্বাগত জানাবে না। যার নিয়োগের প্রজ্ঞাপনকে বাতিল করার দাবি সভায় তোলা হয়।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক ট্রেকহোল্ডার বলেন, মাসরুরকে না চাওয়ার পেছনে প্রধান কারন হিসেবে রয়েছে একজন সিনিয়র নির্বাহি পরিচালকের কমিশনার হওয়া ও একজন কমিশনারের চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন বিফলে যাওয়া। যদিও এখনো ২টি কমিশনার পদ খালি রয়েছে। এছাড়া আওয়ামীলীগ সরকারের নিয়োগ দেওয়া ২ জন কমিশনার এখনো রয়েছেন। যাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। কারন এরইমধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের নিয়োগ দেওয়া চেয়ারম্যান ও ২ জন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন নিজেদের সম্মান বজায় রাখতে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ নিয়োগ বাতিল বা পদত্যাগে বাধ্য করতে না পারে।

ডিএসইর আরেক সিনিয়র ট্রেকহোল্ডার বলেন, বিএসইসিতে চেয়ারম্যান নিয়োগকে নিয়ে গতকাল সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে কাজ করেছে, তা তারা করতে পারে না। এতে বিএসইসির কাঠামো ঠিক থাকবে না। যারা প্রতিবাদ করেছে চেয়ারম্যান নিয়োগের, তারাও কিন্তু অনিয়মে জড়িত এবং রোড শোতে অংশ নিয়েছে। এখন নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার না হওয়ায় মাসরুরকে নিয়ে গতকাল প্রতিবাদ করেছে। অথচ এরাই দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোসহ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করে আসছে অন্যায়ভাবে।

উল্লেখ্য, ড. এম. মাসরুর রিয়াজ ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে পলিসি এক্সচেঞ্জ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। উনার পিতা প্রয়াত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। যিনি প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন।

১ টি মতামত “মাসরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান না হতে দেওয়ার ষড়যন্ত্র”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.