আজ: শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪ইং, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

পরিস্থিতি বিবেচনায় কমানো হতে পারে এডিপি’র আকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাসিনা সরকারের আমলে গ্রহণ করা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে অন্তর্বর্তী সরকার ৬৫ হাজার কোটি টাকা কমাতে পারে। সরকারি ব্যয় কমিয়ে আনার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে পরিকল্পনা ও অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা জায়, হাসিনা সরকারের সময় চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিপির আকার ধরা হয়েছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে অন্তর্বর্তী সরকার এডিপি আকার থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনার চিন্তা করছে। ফলে এডিপি’র আকার গিয়ে দাঁড়াবে দুই লাখ কোটি টাকায়।

হাসিনা সরকারের সময় এই এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যমান এডিপিতে অনেক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রকল্প রয়েছে। অন্তবর্তী সরকার এখন এই প্রকল্পগুলো আর বাস্তবায়ন করবে না। ফলে এখান থেকে প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এডিপি প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। এসব মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প কী রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, সড়কের মতো অবকাঠামোগত প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে আনা অথবা বরাদ্দ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এখন এই ঘাটতি ৪ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাজেট কাটছাঁট করতে হবে। আর বাজেট কাটছাঁট মানেই এডিপি থেকে কমপক্ষে ৬৫ হাজার কোটি টাকা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে বাজেটে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারিত রয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণ এখন লাখ কোটি টাকার নিচে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলত এডিপি বাস্তবায়নের জন্যই ব্যাংক থেকে সরকারকে ঋণ নিতে হয়।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি’র মধ্যে সরকার দেবে এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে আসবে এক লাখ কোটি টাকা। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প সংখ্যা রয়েছে এক হাজার ৩২১টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১১৩৩টি, সমীক্ষা প্রকল্প ২১টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৮৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ৮০টি।

এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি খাত : ১. পরিবহন ও যোগাযোগ প্রায় ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (২৬.৬৭ শতাংশ)। ২. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রায় ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা (১৫.৩৮ শতাংশ)। ৩. শিক্ষা প্রায় ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা (১১.৩৬ শতাংশ)। ৪. গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি প্রায় ২৪ হাজার ৮৬৮ কোটি তিন লাখ টাকা (৯.৩৮ শতাংশ)। ৫. স্বাস্থ্য প্রায় ২০ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা (৭.৮০ শতাংশ)। ৬. স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রায় ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ২১ লাখ টাকা (৬.৭৯ শতাংশ)। ৭. কৃষি প্রায় ১৩ হাজার ২১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা (৪.৯৯ শতাংশ)। ৮. পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ প্রায় ১১ হাজার ৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা (৪.১৮ শতাংশ)। ৯. শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা প্রায় ছয় হাজার ৪৯২ কোটি ১৮ লাখ টাকা (২.৪৫ শতাংশ)। ১০. বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রায় চার হাজার ৭৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা (১.২৫ শতাংশ)।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.