আজ: রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ইং, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার |

kidarkar

প্রশাসনে ধীরগতি-স্থবিরতা, ‘দক্ষতা দেখাতে না পারলে ব্যবস্থা’

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের আড়াইমাসেও কাটেনি প্রশাসনে স্থবিরতা। সিদ্ধান্ত নেয়া ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকটাই ধীরগতি। এরইমধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দু’জন উপদেষ্টা অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন।

সমাজ কল্যাণ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ সম্প্রতি রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসহযোগিতার কারণে দ্রুত গতিতে কাজ এগোচ্ছে না। অতিদরিদ্র সোয়া কোটি ভাতাভোগীর অক্টোবরের ভাতা এখনও ছাড় করতে পারেনি মন্ত্রণালয়।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে চট্টগ্রামে এক সভায় প্রশ্ন তুলেছেন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া-ও।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে প্রশাসনে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত সচিবদের ওএসডি, চুক্তি বাতিল ও অবসরে পাঠানো হয়। মাঠ প্রশাসনে বিভাগীয় কমিশনারসহ ৫ জেলা ছাড়া সব জেলায় ডিসি পরিবর্তন করা হয়েছে। একই সাথে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব পদে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়। সচিব পদে এসেছে নতুন মুখ। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে খালি আছে ৭ সচিব ও ৮ ডিসির পদ। আবার অনেক বঞ্চিত ও দক্ষ কর্মকর্তার যথাযথ পদায়ন হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগ দিয়েও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ আছে কর্মরতদের। এতে প্রশাসনে ভীতি ও সিদ্ধান্তহীনতা কাজ করছে বলে মনে করেন এই জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ।

এক্ষেত্রে পরিকল্পনার ঘাটতি দেখছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কিছু নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতির ক্ষেত্রে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে প্রশাসনে ভীতি কাজ করছে।

সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ মিয়া বলেন, উচ্চতর পদগুলোতে যারা আছে, তাদের মধ্যে অস্তিরতা কাজ করছে। আবার যাদেরকে বসানো হচ্ছে, তাদের মধ্যেও কিন্তু স্থিরতা নেই। তারাও চিন্তা করতেছে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে। যেই কারণে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করছেন। দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে নেবেন, এসব পদে যারা প্রত্যাশী আছেন, তারা মনে করবেন, আমাদের তো অবসরে যাওয়ার সময় আসছে, আমরা তো এই সুযোগটা পাবো না। সুতরাং তাদের মধ্যে অস্তিরতা-অসন্তোষ দেখা দিবে।

উপদেষ্টা-সচিবদের সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর জোর দিচ্ছেন মো. ফিরোজ মিয়া। বললেন, উপদেষ্টার সংখ্যা কম। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরামর্শ-সিদ্ধান্ত পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। আর একজন উপদেষ্টা এতগুলো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় সচিবরাও সঠিক নিদের্শনা পাচ্ছে না।

তবে প্রশাসনে আগের চেয়ে শৃঙ্খলা ফিরেছে বলে মনে করেন শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শূন্য পদের জন্য দক্ষদের খুঁজতে সময় লাগছে।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, উপদেষ্টাদের যে মুভমেন্ট ও সক্রিয়তা, প্রশাসনে সেই প্রভাব পড়েছে। মাঠে কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনকে আরও সক্রিয় করছি। আপনারা দেখবেন, সচিবরাও বাজারে যাচ্ছে। যা গত ১০ বছরে দেখা যায়নি।

দক্ষতা ও সততা দেখাতে না পারলে দায়িত্বপ্রাপ্তরা পদে থাকতে পারবেন না বলে স্পষ্ট করলেন শ্রম উপদেষ্টা। বলেছেন, দায়িত্ব নিয়ে তারা কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পারছে, আমরা তা দেখছি। আমরা তাদের কাজের অগ্রগতি দেখছি। কাজই তাদের পদের থাকার নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, প্রশাসন সংস্কার কমিশন কাজ করছে। পেশাদার ও নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলাই অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.