আজ: সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ইং, ১২ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস, ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র -জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ভারতে বসে বিভিন্ন জনের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা বলেছেন তিনি। যার কয়েকটি অডিও ফাঁস হয়েছে। এবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের স্থানীয় সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠ শোনা যায়। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বলে পরিচয় দেন। তার নাম শাকিল আলম বুলবুল বলে দাবি করা হয়। ফোনালাপে ওই নেতা তাদের ওপর মামলা-হামলার বিবরণ তুলে ধরেন। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা দুই মাস তাদের অপেক্ষা করতে বলেন।

তিন মিনিটের বেশি সময়ের ফোনালাপটিতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তোমাদের বাড়িঘরে যারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, তাদের বাড়ি ঘর নেই? সব কথা কি বলে দিতে হয়?’

ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এখন বেশি বেশি বাড়াবাড়ি করছে। দেখো ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই শত্রুরা টেকে কি না? কাউকে পালাতেও দেওয়া হবে না। যে কয়টা নাফরমানি করছে তাদের একটাও অস্ত্র থাকবে না।’

এ সময় অন্য প্রান্ত থেকে (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার কথায় আমরা ভরসা রাখছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একদম একদম।’

তখন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আপনি একটু মাথা ঠান্ডা রেখে আপনার কৌশলে এগোন নেত্রী। তবে সবাইকে সব কাজ বরাদ্দ রেখে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঠিক আছে, আমি সবাইকে বলছি, তোমরা শুধু দুই মাস অপেক্ষা করো। কিছু বলো না।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা ফেল করবে, আর আমরা যদি কিছু করি, তখন বলবে আমাদের জন্য করতে পারে নাই। সেটা আর বলার মুখ নেই। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবেও ওই যে সুদখোর ইউনুসের গুটি গুটি চেহারার দ্বার আটকে গেছে মানুষের কাছে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী অলরেডি বাংলার মানুষ বুঝে গেছে। মানুষ ভয়তেই কেউ মুখ খুলতে পারছে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এখন ওদের ভয় দিতে হবে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, ওই যে আমাদের গোবিন্দগঞ্জের কালাম ভাই এমপি আর আমি উপজেলার চেয়ারম্যান বর্তমান ছিলাম নেত্রী, আর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পরপর ছিলাম দুই বার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। ওনার বাড়ি গাড়ি সব জ্বালাই-পুড়াই দিছে। আমারও বাড়ি গাড়ি সব জ্বালাই পোড়াই দিছে নেত্রী। আমাদের অসংখ্যা মামলা দিছে, আপনি শুধু আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘না আমি একটা কথা বলি, তোমাদের বাড়ি পোড়াই দিছে কে?’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ওরাই নেত্রী, জামায়াত-বিএনপি সকলই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের ঘর-বাড়ি নেই?’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে, সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি না, না নেত্রী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমাদের নাই, তাহলে কারও ঘর-বাড়ি থাকবে না।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘একটা সংশয় নেত্রী, মাননীয় নেত্রী গোবিন্দগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সেক্রেটারি, তাদের নামে একটি মামলাও হয়নি। কিংবা তাদের বাড়ি-ঘরেও ওরা যায়নি। ওরা কিভাবে এটাকে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শোনো ওরা দেখে যেগুলি পোটেনশিয়াল, যেগুলি দেখে একেবারেই শক্ত তাদের ওরা তালিকা করে। সবাইকে কাউন্ট করে না। সেইজন্য বললাম, যাদের বাড়িঘর পোড়া গেছে, তাদের হিসাব নেওয়া হচ্ছে, কারা পোড়াতে আসছিল, আর আমার বাড়ি যদি পোড়ে তাদেরও পুড়বে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘জ্বি নেত্রী, জ্বি নেত্রী আলহামদুলিল্লাহ। আপনার সঙ্গে কথা বলে বুকটা ভরে গেলো নেত্রী। আপনি ভালো থাকবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মামলা, আমারতো শুধু গোবিন্দগঞ্জ না, আমারতো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস। আমি বলছি সবাই তালিকা করো। তোমরাও তালিকা করো। ২২৭ মার্ডারের লাইন্সেস পেয়ে গেছি। এক মামলায় যে শাস্তি, শোয়া দুইশো মামলায় একই শাস্তি। তাই না। ঠিক আছে সেই শাস্তি নেব। তার আগে শোয় দুইশো হিসাব করে নেব। এটা যেন মাথায় থাকে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, ইনশাআল্লাহ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবার একবার আসতে পারলে কেউ ফেলাইতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.