আজ: সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ইং, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার |

kidarkar

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন আজ, কে হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প- কে হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? তা নিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা, মেলানো হচ্ছে নানান সমীকরণ।

প্রার্থী হওয়ার দৌড় থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হঠাৎ ছিটকে পড়া এবং ট্রাম্পের ওপর বন্দুক হামলাসহ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নাটকীয় নানান ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।

এবারের প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সংকট সমাধানের পাশাপাশি ইউক্রেন ও গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ, আফগানিস্তানে তালেবান ইস্যুসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা বৈশ্বিক বিষয়গুলোও গুরুত্ব পেতে দেখা যাচ্ছে।

বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটা ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচন’ হিসেবে পরিচিত হলেও এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি আইনসভার সদস্যদেরকেও বেছে নেবেন মার্কিন নাগরিকরা। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন নাগরিকদের বাইরেও সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ নজর রাখছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে

নির্বাচনের শেষ দিকের প্রচারণায় ভোটারদের নানা ধরনের আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প এবং কমলা। ভোটারদের উদ্দেশে কমলা হ্যারিস বলেছেন, নির্বাচিত হলে প্রথম দিন থেকেই তিনি জীবনযাত্রার খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দেবেন। তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে খাদ্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনার সুবিধা, আবাসনের ব্যবস্থা ও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রাকে সাশ্রয়ী করার অঙ্গীকার করেছেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী তেল উৎপাদন বাড়িয়ে জ্বালানির দাম কমানো হবে। যদিও সুদের হার কমানো এককভাবে প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে নয়, তবুও তিনি এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে হ্যারিস তার দীর্ঘকালীন প্রসিকিউটরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন, যেখানে ট্রাম্প এরই মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ট্রাম্প মাদক চক্র ও গ্যাং সহিংসতা দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি ডেমোক্র্যাটদের অধীনস্থ শহরগুলোকে পুনর্গঠন করতে চান। প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী বা ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করে দেশের অভ্যন্তরে ‘বিপজ্জনক শত্রুদের’ মোকাবিলারও ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।

গর্ভপাতের অধিকারকে কেন্দ্র করে কমলা হ্যারিস নির্বাচনী প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন। সারা দেশে এই অধিকারকে সুরক্ষিত করার আইন প্রণয়নের পক্ষে জোর দিচ্ছেন তিনি।

অন্যদিকে, ট্রাম্প এই বিষয়ে একক কোনো নীতিতে এগোতে পারেননি। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নিয়োগ দেওয়া তিনজন বিচারপতি ২০২২ সালে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার (‘রো বনাম ওয়েড’ রুলিং) বাতিল করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি চারটি বিদেশি ভাষার অন্যতম হিসেবে স্থান করে নিয়েছে বাংলা। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, নিউইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে বাংলাও। এশীয়-ভারতীয় ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলাই প্রথম ছাপা হলো নিউইয়র্কের ব্যালট পেপারে।

নিউইয়র্কের প্রধান শহর নিউইয়র্ক সিটিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে রায়ান বলেন, অভিবাসী ভোটারদের সুবিধার জন্য ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি ৪টি ভাষা অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড অব ইলেকশন্স নিউইয়র্ক শাখা। এই ভাষাগুলো হলো চীনা, স্প্যানিশ, কোরিয়ান ও বাংলা।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যটি অধিবাসী অধ্যুষিত। দেশটির মোট অভিবাসীদের একটি বড় অংশ থাকেন নিউইয়র্ক সিটিসহ এই রাজ্যের বিভিন্ন শহরে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গোটা নিউইয়র্কে লোকজন দুই শতাধিক ভাষায় কথা বলেন। এসবের মধ্যে হিন্দি, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, তামিলসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষাও রয়েছে। কিন্তু সেসবের মধ্যে ভারতীয় ভাষা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে একমাত্র বাংলাকে।

এই নির্বাচনে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যেকোনো মার্কিন নাগরিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে নর্থ ডাকোটা বাদে যুক্তরাষ্ট্রের বাকি ৪৯টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে আগেই ভোটার নিবন্ধন করা হয়। ভোটের আগেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

এমনকি বিদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকরাও ভোটার নিবন্ধনে নাম লেখাতে পারেন। এক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালোটে বা ডাকযোগে ভোট দেওয়ার জন্যও তারা আবেদন করতে পারেন। ভোটাররা কতক্ষণ ভোট দিতে পারবেন, সেটি অঙ্গরাজ্য গুলোর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে সাধারণত আগাম ভোটের সুযোগ দেওয়া হয়। যার ফলে তালিকাভুক্ত ভোটাররা নির্বাচনের দিনের আগেই তাদের ভোট দিতে পারেন।

সেখানে ডাকযোগে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। এক্ষেত্রে অসুস্থতা, প্রতিবন্ধীদের জন্য, ভ্রমণ বা অন্য কোনো কারণে দেশ বা অঙ্গরাজ্যের বাইরে থাকায় ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন না যারা তাদের জন্য ডাকযোগে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যারা নির্বাচনের দিন ভোট দিতে যাবেন, তাদের সশরীরে ভোট কেন্দ্রে হাজির হয়ে ভোট দিতে হবে।এর মধ্যেই প্রায় ৭৫ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.