বেড়েছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের দিকে আবারো ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ। ফলে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এ খাতে নিট বিক্রি (বিনিয়োগ) ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ খাতে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা, যা পুরো অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকারও বেশি। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরের একই সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মক ধারায় ছিল। অর্থাৎ ওই সময় বিক্রির চেয়ে সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর প্রবণতা ছিল বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আস্থার সংকটে দুর্বল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এখনও আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতা অব্যাহত আছে। সেই আমানতের একটা অংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হিসেবে আসছে। আবার সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর প্রবণতাও কমেছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারেও দুর্দিন চলছে। সব মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ সরকারের ঋণ হিসেবে গণ্য হয়। এটা বাজেট ঘাটতির অর্থায়নে ব্যবহার করে সরকার। নিম্ন মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষ, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন প্রকল্প চালু রয়েছে। সামাজিক সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে সঞ্চয়পত্রে তুলনামূলক বেশি মুনাফা (সুদ) দেয় সরকার। বর্তমানে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ১১.৭৬ শতাংশ। এ ছাড়া পরিবার সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ১১.৫২ শতাংশ, ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সুদ ১১.২৮ শতাংশ ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ১১.০৪ শতাংশ। অন্যদিকে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর ব্যাংকে ঋণের সুদহারের পাশাপাশি আমানতের সুদহার বেশ বেড়েছে।
বর্তমানে কোনো কোনো ব্যাংকে আমানতের সুদের হার ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তারপরও ব্যাংক খাতে আমানতের দেখা মিলছে কম। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরপর্যন্ত ব্যাংক খাতে আমানতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.২৬ শতাংশ। অথচ কয়েক মাস আগে এ খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশের ওপর ছিল। গত বছর ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১.০৪ শতাংশ।
জানা গেছে, এবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে মাত্র ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকার নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।