আজ: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

মাধ্যমিক শাখায় যোগ হচ্ছে আরবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কারিক্যুলামে পরিবর্তন আনছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ পরিবর্তনে নতুন বিষয় হিসেবে আরবি শিক্ষা যোগ করা হচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি শ্রেণিতে আরবি সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যবই থেকে চারজন লেখকের লেখা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। বাদ পড়া গল্প- প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও রয়েছেন। এছাড়া, তিনজন লেখকের কবিতা ও গল্প পরিবর্তন করা হবে এবং পাঁচজন লেখকের রচনার অনুশীলনী পরিমার্জন করার প্রস্তাব রয়েছে।

নানা আলোচনা-সমালোচনা আর শিক্ষক-অভিভাবকদের উপেক্ষা করে ২০২২ সালে প্রণনয়ন করা হয়েছিল সবশেষ শিক্ষাক্রম। যা দেশের শিক্ষাবিদদের একটা বড় অংশ ওই শিক্ষাক্রম গ্রহণ করতে পারেননি। শিক্ষা পরিবারের বড় অংশকে বাদ দিয়ে প্রণয়ন করা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরুও করেছিলো সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। সেই বিতর্কিত শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিকে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে সব শ্রেণিতেই আরবি বিষয়টি যুক্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২০১২ সালের কারিকুলামের বাংলা বিষয়ে যোগ হচ্ছে “আনন্দ পাঠ”। সকল শ্রেনিতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের বাইরে অতিরিক্ত হিসেবে আরবি বিষয়টি যুক্ত করা হচ্ছে। সূত্রানুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের কারিকুলামে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আনা হচ্ছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্য পাঠের সঙ্কলনে। এখানে মোট ২৮টি গদ্য এবং ২৮টি পদ্য রয়েছে। এখান থেকেই বাছাই করা গল্প ও কবিতা নিয়ে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ বছর এই সিলেবাসের গল্প-কবিতা বাছাইয়েও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর মধ্যে তিনজন লেখকের রচনা পরিবর্তন করা হচ্ছে। পাঁচটি রচনার অনুশীলনীতে পরিমার্জন আনা হচ্ছে। আর চারজন লেখকের লেখা পুরোপুরি বাদ দেওয়া হচ্ছে।

বাদ পড়া লেখকদের তালিকায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সঙ্কলন “বায়ান্নর দিনগুলো”, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখা “মহাজাগতিক কিউরেটর”, দিলওয়ার ও তার লেখা “মানুষ সকল সত্য” এবং মহাদেব সাহার লেখা “শান্তির গান”।

পরিবর্তন আনা হচ্ছে তিন লেখকের লেখায়। সেই তালিকায় রয়েছে প্রমথ চৌধুরী, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, ও কাজী নজরুল ইসলামের লেখা।

এখানে প্রমথ চৌধুরীর বর্ষা প্রবন্ধের পরিবর্তন করে সেখানে যুক্ত হচ্ছে সাহিত্যের খেলা, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের গৃহ পরিবর্তন করে যুক্ত করা হচ্ছে অর্ধাঙ্গী, কাজী নজরুল ইসলামের আমার পথ পরিবর্তন করে যুক্ত করা হচ্ছে “যৌবনের গান”।

আরও পাঁচজন লেখকের লেখার অনুশীলনীর সম্পাদনা করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শওকত আলীর কপিল-দাস মুর্মুর শেষ কাজ, কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী ও সাম্যবাদী, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর আমি কিংবদন্তির কথা বলছি এবং সৈয়দ শামসুল হকের নুরুলদীনের কথা মনে পড়ে যায়।

কারিক্যুলাম পরিবর্তন পরিমার্জনের বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ বি এম রিয়াজুল হাসান বলেন, সবশেষ কারিক্যুলাম এমনিতেই বিতর্কিত। সেটি বাতিল করে এখন পুরনো ২০১২ সালের কারিকুলামে ফিরে গেলেও সেখানে প্রয়োজন এবং বাস্তবতার তাগিদেই বেশি কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে এতো বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন আনা হবে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.