আজ: সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ইং, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

রমজান উপলক্ষে ১১ পণ্য আমদানিতে বিশেষ সু‌বিধা

শেয়ারবাজার ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাসে অতি প্রয়োজনীয় ১১টি খাদ্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পণ্যগুলো হলো- চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মশলা এবং খেজুর। এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানি করা যাবে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আমদানি করার ক্ষেত্রে লেনদেন সহজ করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। এই সিদ্ধান্ত আমদানিকারকদের এসব পণ্য আমদানিতে সহায়তা করবে। কারণ, রমজানের আগে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে।

এর আগে ৬ নভেম্বর পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আগের ১০০ শতাংশ মার্জিন বা জামানতের মূল্য রাখার নির্দেশ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সেই মার্জিন নির্ধারণ হবে গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের ভিত্তিতে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় ওই পণ্যগুলোর আমদানি সহজীকরণের মাধ্যমে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখাসহ প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা এবং খেজুরের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে সংরক্ষিতব্য নগদ মার্জিনের হার ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে উল্লিখিত পণ্যগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনে অগ্রাধিকার দিতে পরামর্শ দেওয়া হলো। এই নির্দেশনা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, এলসি মার্জিন শিথিল করার কারণে আমদানিকারকদের নগদ টাকা কম লাগবে। এতে আমদানি খরচও কম হবে। ফলে এ সুবিধার কারণে বাজারে এসব পণ্যের দাম কিছুটা হলেও কমার কথা। ডলার সংকটে সাম্প্রতিক সময়ে এসব পণ্যের এলসি খোলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ডাল, ভোজ্যতেল, ছোলা, খেজুর, বিভিন্ন ফলের এলসি খুলতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই দেশের সার্বিক আমদানি কমে গেছে। কিন্তু আগামী রোজায় প্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। আসছে রমজান মাসে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ঘাটতি যেন না হয় সেজন্য সরকার আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজন্য চিনি, ছোলা ও সয়াবিন আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার ও দুই কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এই পণ্যগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোজার সময় ছোলা ও সয়াবিনের চাহিদা বেড়ে যাবে, সেই চিন্তা থেকেই সরকার আগেভাগে আমদানির অনুমতি দিয়েছে। চিনি, ছোলা ও সয়াবিন আমদানি করবে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। শিগগিরই খেজুর আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সার্বিকভাবে আর্থিক দুরবস্থা থাকলেও সরকার কোনোভাবেই চায় না সাধারণ মানুষের কষ্ট হোক, সেজন্য এ সিদ্ধান্ত।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি কেজি ১২০ টাকা ৯২ পয়সা দরে মোট ৬০ কোটি ৪৬ লাখ টাকায় এই চিনি কেনা হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। প্রতি কেজি ১০৭ টাকা ৩৯ পয়সা দরে মোট ১০১ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকায় এই ছোলা কেনা হবে।

স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১৬৩ টাকা ১৫ পয়সা দরে ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। মোট ব্যয় হবে ৫৩ কোটি ১৮ লাখ ৬৫৯ হাজার টাকা।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.