শেয়ারবাজার অবশেষে ঊর্ধ্বমুখী
নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে অবশেষে দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২৭ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে দুই বাজারেই বেড়েছে মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৫৭ পয়েন্ট। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫১ পয়েন্ট ও দ্বিতীয় কার্যদিবসে কমে ১০ পয়েন্ট। আর তৃতীয় কার্যদিবসে প্রধান মূল্যসূচক ৭ পয়েন্ট বাড়লেও, দরপতন হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। তবে অল্পসময়ের মধ্যে দাম কমার তালিকা বড় হয়ে যায়। এতে লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
অবশ্য প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হতে থাকে। এতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৯১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৪২ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা গ্রামীণফোনের ১৩ কোটি ২৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অগ্নি সিস্টেম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মিডল্যান্ড ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, আইসিবি, লাভেলো আইসক্রিম, ফারইস্ট নিটিং এবং ইসলামী ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৩৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।